বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে হাজার হাজার দ্বীপ (Island)। যেগুলির মধ্যে অধিকাংশ দ্বীপ পর্যটনস্থল হিসেবে বিবেচিত হয়। বহুক্ষেত্রেই মূল ভূখণ্ডে বসবাসকারী বাসিন্দারা ছুটি কাটাতে যান সেগুলিতে। এমনকি, কিছু কিছু দ্বীপ আবার সেগুলির সৌন্দর্যের জন্য সারা বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এক কথায়, প্রতিটি দ্বীপেই কোনো না কোনো নিজস্ব বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। আর সেগুলিই আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।
তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এমন একটি দ্বীপের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব, যেটি সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন না। মূলত, ক্রোয়েশিয়ায় (Croatia) এমন একটি দ্বীপ রয়েছে যা আকাশ থেকে একটি বিশাল আঙ্গুলের ছাপ বা ফিঙ্গারপ্রিন্টের মত দেখায়।
এই প্রসঙ্গে ডেইলি মেইলের একটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে, Bavljenac বা Baljenac নামের ওই দ্বীপটিকে আকাশ থেকে দেখলে একটি বড় আঙুলের ছাপের মতো দেখায়। অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের (Adriatic Sea) উপর অবস্থিত এই দ্বীপটি ০.১৪ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। মূলত, ডিম্বাকৃতি এই দ্বীপটিতে পাথরের দেওয়াল তৈরি করা হয়েছে। এই দেওয়ালগুলোকে একত্রে যুক্ত করা হলে তাদের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ২৩ কিলোমিটার।
অষ্টাদশ শতকের দেওয়াল: এই প্রসঙ্গে ক্রোয়েশিয়ান ন্যাশনাল ট্যুরিস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ওই দ্বীপটিকে পার্শ্ববর্তী Kaprije নামক দ্বীপে বসবাসকারী কৃষকেরা চাষাবাদের জন্য ব্যবহার করতেন। মূলত, ওই কৃষকরা দ্বীপটিকে চাষযোগ্য করে ডুমুর, লেবু এবং আঙ্গুরের মত ফলের চাষ করতেন।
এমতাবস্থায়, প্রবল গতিবেগে আসা বাতাস থেকে ফলগুলিকে রক্ষা করতে এবং জমি ভাগ করার জন্য পাথরের দেওয়াল তৈরি করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, অষ্টাদশ শতকে এই দেওয়ালগুলি নির্মিত হয়। মূলত, এগুলি ড্রাই স্টোন ওয়ালিং নামের একটি কৌশল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। পাথরের স্তুপ এবং ইন্টারলকিংয়ের মাধ্যমে এগুলিকে দাঁড় করানো হয়।
গাছ আর নেই কিন্তু দেওয়াল রয়ে গেছে: বর্তমানে এই দ্বীপে কোনো ফলের গাছ অবশিষ্ট নেই। তবে সেই দেওয়ালগুলো এখনও টিকে রয়েছে। এগুলিকে ২০১৮ সাল থেকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং ইউনেস্কো এটিকে “Intangible Cultural Heritage”-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। পাশাপাশি, এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা এই দ্বীপটিকে দেখতে আসেন। উল্লেখ্য যে, Sibenik Archipelago-এর অন্তর্ভুক্ত ২৪৯ টি দ্বীপের মধ্যে Baljenac হল অন্যতম।