বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতে জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন চালু করতে চায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএস (RSS)। তাদের দাবি, দেশে হিন্দুদের জন্মের হার কমছে। পাশাপাশি, জাতি ও বর্ণের ধারণাও সম্পূর্ণভাবে অবলুপ্ত করতে তৎপর তারা। এরই মধ্যে নতুন আন্দোলনে নামতে চলেছে আরও এক সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP)। যা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছ। পরিষদের দবি, ধর্মান্তরণের মাধ্যমে হিন্দু থেকে মুসলমান বা খ্রিস্টান হচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের সমস্ত সংরক্ষণের সরকারি সুবিধা যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরিষদ মনে করছে, দেশে এই নীতি চালু হলে ধর্মান্তরণের হার কমে আসবে অনেকটাই। তারা জানিয়েছে, তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির হিন্দুরা ধর্ম বদল করলে তাঁদের লেখাপড়া, চাকরি-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সমস্ত সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এ নিয়ে বড় মাপের একটি আন্দোলনে নামতে ‘সামাজিক সমরসতা অভিযান’ নামে কর্মসূচি নিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
এই আন্দোলনের প্রধান গুজরাতের নেতা তথা পরিষদের সর্বভারতীয় সম্পাদক দেওজিভাই রাওত। সোমবার দু’দিনের সফরে কলকাতা এসেছেন তিনি। ধর্মান্তকরণ কোন পথে আটকাবে পরিষদ, সেই নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করার কথা তাঁর। পাশাপাশি, একটি আলোচনা সভাতেও যোগ দেবেন তিনি। সেখানে পরিষদের পক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরাও থাকবেন।
আন্দোলন নিয়ে দেওজিভাই রাওত বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষণের সুবিধা পাওয়ার কথা শুধুমাত্র হিন্দুদেরই। কারণ জাতপাতের কারণে হিন্দু সমাজের বঞ্চিত অংশকে তাঁদের আর্থিক, সামাজিক প্রতিষ্ঠা দেওয়ার জন্যই সংরক্ষণ। মুসলমান বা খ্রিস্টান ধর্মে এমন কোনও জাতিভেদ নেই বলেই দাবি করা হয়। তাই হিন্দু থেকে যাঁরা মুসলমান বা খ্রিস্টান হচ্ছেন, তাঁরা সংরক্ষণ পাওয়ার যোগ্য নন।” পরিষদের তরফে এও দাবি করা হয়েছে যে কেন্দ্রকে আগে এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
পরিষদের এই প্রস্তাব কতটা যুক্তিযুক্ত, তা খতিয়ে দেখতে সরকার ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কে জি বালকৃষ্ণণের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ওই কমিশনের কাছেও নিজেদের দাবি জানাবে। পশ্চিমবঙ্গেও সেই মতো কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে পরিষদ সূত্রে খবর। পরিষদের তরফে দাবি করা হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে বেশি করে হিন্দুরা ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিস্টান হচ্ছেন। তুলনায় এটি বেশি হচ্ছে দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে।
কেউ ধর্মান্তরিত হলে আর সংরক্ষণের সুবিধা যে পাবেন না, তা নিয়ে প্রচারের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাদের বক্তব্য, প্রচারে বলা হবে, ১৯৫০ সালে ভারতের সংবিধানে কেবল হিন্দুদের সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়ার কথাই বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে সেই আওতায় শিখ ও বৌদ্ধধর্মের কিছু অংশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে খ্রিস্টান বা মুসলমানদের সংরক্ষণের অধিকার স্বীকৃত নয় সংবিধানে।