বাংলা হান্ট ডেস্ক : তৃণমূলের জন্য বেশ মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে কুড়মিরা। শাসকদল তৃণমূলকে (TMC) আর একটি ভোটও নয়! ‘কুড়মি কুড়মালি জনজাগরণ জড়ুআহি ও পদযাত্রা’ করে জনসমক্ষে এই কথা তুলে ধরছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। গত এপ্রিল মাসে আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবিতে রেল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি নেওয়ার পর আদিবাসী কুড়মি সমাজ প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানায়, শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে এবার তাঁরা পথে নামবেন।
শাসকদলকে ভোট দেবে না আদিবাসী কুড়মি সমাজ। ওই ঘোষণা মতো এবার কুড়মি জনজাতি মানুষজনদের কাছে প্রচার করতে ‘কুড়মি কুড়মালি জনজাগরণ জুড়ুআহি ও পদযাত্রা’র কর্মসূচি নিয়েছে। সমগ্র জঙ্গলমহল জুড়ে আদিবাসী কুড়মি সমাজ বিভিন্ন ব্লক নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে গ্রাম কমিটির উদ্যোগে একদিনে একাধিক গ্রামে পদযাত্রা করে একটি জায়গায় জমায়েত হয়ে কুড়মি জনজাতির মানুষজনদের কাছে বার্তা রাখছে, তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ার জন্য।
কুড়মি অধ্যুষিত জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায় কুড়মি জনজাতিদের ভোট যাবে কোন দিকে? এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন বনমহল পুরুলিয়ায়। এই নিয়ে যেমন নানান কাটাছেঁড়া চলছে জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে। তেমনই চলছে নানান জল্পনা। আদিবাসী কুড়মি সমাজের অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন,’ শাসকদল তৃণমূলকে একটা ভোটও নয়। এই বিষয়ে গ্রামে গ্রামে কুড়মি জনজাতির মানুষজনের মধ্যে আমরা প্রচার শুরু করেছি।’
কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত কুড়মিদের? আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবিতে আদিবাসী কুড়মি সমাজ ২০১৬ সাল থেকে পুরুলিয়া জেলা-সহ জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে আন্দোলন করছে। তবে এই সামাজিক সংগঠন সবচেয়ে শক্তিশালী বনমহল পুরুলিয়ায়। আটের দশক থেকে এই আদিবাসী কুড়মি সমাজ সংগঠন থাকলেও এখন প্রথম সারির নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তাঁরা আগে পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজে ছিলেন। জঙ্গলমহলে প্রচার রয়েছে, এই পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজ খানিকটা শাসকদল তৃণমূলের দিকে রয়েছে।
পুরুলিয়া-সহ জঙ্গলমহলের চার জেলায় মোটামুটিভাবে কুড়মিদের সাতটি সংগঠন কাজ করছে। আদিবাসী কুড়মি সমাজ ছাড়াও সেই সংগঠনগুলি হল ‘কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ,’ ‘কুড়মি সেনা’, ‘আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজ’, ‘হামরা ৮১ গুষ্ঠীর আগদেহলি।’ এই চারটি সংগঠন মিলে ‘ ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি’ তৈরি করেছে।
বাকি দুটি সংগঠন হল পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজ, নেগাচারি আদিবাসী কুড়মি সমাজ। এই সমস্ত সংগঠনগুলোর দাবি এক, তাদের আদিবাসী তালিকাভুক্ত করতে হবে। সেই কারণে আন্দোলন চলছে। তবে আন্দোলনের পদ্ধতি-সহ আরও কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।