বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর মামলায় (RG Kar Case) গত সোমবার সঞ্জয় রায়ের (Sanjay Roy) সাজা ঘোষণা করেছে শিয়ালদহ আদালত। অনেকেই ভেবেছিলেন, এই প্রাক্তন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে হয়তো ফাঁসি দেওয়া হবে। কিন্তু বিচারক অনির্বাণ দাস (Judge Anirban Das) তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৫০,০০০ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন। এই রায় ঘোষণার পর থেকেই চর্চার কেন্দ্রে রয়েছেন শিয়ালদহ জেলা দায়রা আদালতের বিচারক। সেই সঙ্গেই শিরোনামে উঠে এসেছে তাঁর দেওয়া আরেকটি রায়। সেই মামলায় আসামীকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক অনির্বাণ দাস।
কোন মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক দাস (Judge Anirban Das)?
জানা যাচ্ছে, সেই মামলা ৯ বছর আগেকার। বিচারক অনির্বাণ দাস সেই সময় বারাসাতে কর্মরত ছিলেন। মাদক কারবার সংক্রান্ত এক মামলার আসামীকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। আরজি কর মামলায় সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণার পর ফের একবার শিরোনামে উঠে এসেছে ৯ বছর পুরনো বিচারক দাসের সেই রায়।
সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে মাদক চক্রের পাণ্ডা আনসারকে গ্রেফতার করেছিল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। সল্টলেকের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই মাদক চক্রের আরও এক পাণ্ডার খোঁজ মেলে। তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। জানা যাচ্ছে, সেই সময় সল্টলেকে মাদক উদ্ধারে তল্লাশি অভিযান চালানোর পর ৫৩ কেজি ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ আরজি কর আন্দোলনের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে মমতার কাছে নালিশ! অভিযোগ ফাঁস হতেই তোলপাড়
পরবর্তীতে সেই মামলা ওঠে বারাসাত আদালতে। বিচারক অনির্বাণ দাস (Judge Anirban Das) সেই সময় এনডিপিএস আদালতে কর্মরত ছিলেন। তাঁর এজলাসেই এই মামলা উঠেছিল। শুনানি প্রক্রিয়ায় সওয়াল জবাব শেষে মাদক চক্রের পাণ্ডা আনসারকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন তিনি। তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক।
এই মামলার ক্ষেত্রে বিশেষ পর্যবেক্ষণ ছিল বিচারক অনির্বাণ দাসের। রায়ের কপিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘খুনের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে দোষী সে কোনও এক ব্যক্তির প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। তবে এখানে বিপুল পরিমাণ হেরোইন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যা প্রচুর মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এই নেশা বহু পরিবারের সদস্যদের ধ্বংস করেছে। এই ধরণের অপরাধীরা সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে। এই ধরণের অপরাধীরা জাতির শত্রু’।
বিচারক দাস (Judge Anirban Das) নিজের রায়ের কপিতে আরও লিখেছিলেন, ‘এর আগেও আনসার দু’বার মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও সে নিজেকে শোধরায়নি। ওই পেশাতেই সে থেকে গিয়েছে। সমাজে বেঁচে থাকার অধিকার হারিয়েছে’। মাদক সংক্রান্ত এই মামলায় দোষী আনসারকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক অনির্বাণ দাস। তবে উচ্চ আদালতের তরফ থেকে তাঁকে ৩০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।