বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে গণপরিবহণের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি মাধ্যম হল রেলপথ (Indian Railways)। প্রতিদিনই লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনে চেপে পৌঁছে যান নিজেদের গন্তব্যে। এমতাবস্থায়, যাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে পরিষেবা প্রদানে বর্তমানে একের পর এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে রেলের তরফে। ঠিক সেই রেশ বজায় রেখেই এবার দেশের ১,০০০ টি ছোট স্টেশনকে অত্যাধুনিক করে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের আওতায় এই বৃহৎ পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হবে। এদিকে, ইতিমধ্যেই দেশের ২০০ টি বড় স্টেশনকেও অত্যাধুনিক করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে রেল। এই প্রসঙ্গে রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “মূলত, উন্নয়নশীল শহরগুলিকে চিহ্নিত করে এই কাজ সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি, ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজাররা প্রয়োজন মতো স্টেশনের আধুনিকীকরণের প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবেন। এই কাজ ধাপে ধাপে ক্রমশ এগিয়ে যাবে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কয়েকবছর আগে পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন রেল স্টেশনের দেওয়ালে পানের পিক থেকে শুরু করে নোংরা প্ল্যাটফর্ম দেখতে পেতেন নিত্যযাত্রীরা। যদিও, ধীরে ধীরে সেই চিত্র অনেকটাই বদলে গিয়েছে। সম্প্রতি ওড়িশার খুরদা স্টেশনটিকে ৪ কোটি টাকার বিনিময়ে অত্যাধুনিক সাজে সজ্জিত করা হয়েছিল। সেইভাবেই দেশের আরও ছোট ছোট স্টেশনগুলির এবার ভোল পাল্টে যেতে চলেছে। শুধু তাই নয়, যাত্রীদের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন স্টেশনে গড়ে উঠছে মিনি শপিং মল। সম্প্রতি শিয়ালদহ স্টেশনেও এহেন মল পরিলক্ষিত হয়েছে।
এদিকে, দেশের যে ২০০ টি স্টেশনকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে ভারতীয় রেল সেগুলিতে বিমান বন্দরের মতো সুবিধা থাকবে। এমতাবস্থায়, দৈনিক ৫০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন এরকম ২০০ টি স্টেশনকে বেছে নেওয়া হবে। যার ফলে অবশ্য প্ল্যাটফর্ম টিকিটের দাম বাড়তে পারে। ইতিমধ্যেই ৪৭ টি স্টেশনকে আধুনিক ধাঁচে নতুন করে গড়তে টেন্ডার ডাকা হয়। যেগুলির মধ্যে ৩২ টি স্টেশনে জোরকদমে কাজ চলছে। মূলত, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপেই প্রকল্পটি রূপায়ন করা হবে। পাশাপাশি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে দিল্লির আনন্দ বিহার টার্মিনালও। এছারাও, দেশের আরও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনকে পিপিপি মডেলে গড়ে তোলা হবে নতুন ভাবে।
কোন স্টেশনের জন্য কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, দিল্লি, মুম্বই, আহমেদাবাদ স্টেশনের নয়া রূপের প্রস্তাবিত নকশা ইতিমধ্যেই প্রকাশ করা হয়েছে। এমতাবস্থায়, জানা গিয়েছে, জম্মু-তাওয়াইয়ের জন্য ২৬২ কোটি টাকা, লখনউয়ের জন্য জন্য ৪৯৪ কোটি টাকা, গোয়ালিয়রের জন্য ৫৪৫ কোটি টাকা, প্রয়াগরাজ স্টেশনের জন্য ৯৬০ কোটি টাকা, উদয়পুরের জন্য ৩৫৮ কোটি টাকা, নিউ জলপাইগুড়ির জন্য ৩৫৩ কোটি টাকা, চেন্নাইয়ের জন্য ৮৪২ কোটি টাকা, এর্নাকুলামের জন্য ৪৪৫ কোটি টাকা, ভুবনেশ্বরের জন্য ৩০৮ কোটি টাকা, কন্যাকুমারীর জন্য ৬১ কোটি টাকা ও নেল্লোরের জন্য ৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।