মহাকাশ থেকে ছুটে আসছে প্রকান্ড উল্কাপিন্ড, পৃথিবীবাসীর জন্য বড়ো পদক্ষেপ নেবে ISRO

বাংলা হান্ট ডেস্ক: গোটা বিশ্বজুড়ে গ্রহাণু প্রতিরক্ষা  মিশনের আয়োজন করা হচ্ছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মানের এই অভিযানে  অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো’র (ISRO) চেয়ারম্যান এস সোমনাথ। বুধবার এই মিশনের ভারতের অংশগ্রহণ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন তিনি।

গ্রহাণু প্রতিরক্ষা মিশনে যোগ দেওয়া ইচ্ছা প্রকাশ ISRO প্রধানের:

ভারতও যে এই মিশনে যোগ দেওয়ার যোগ্য সেই দাবি জানিয়ে ইসরো (ISRO) প্রধান এদিন বলেছেন কোন দেশেরই একার পক্ষে গ্রহাণুর  বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি তৈরি করা সম্ভব নয়। তার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ব্যাঙ্গালোরে ইসরোর সদর দপ্তরে আয়োজিত একটি সভায় তিনি পৃথিবীর দিকে ছুতে আসা গ্রহাণুর প্রভাব থেকে পৃথিবীতে রক্ষা করার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

   

এদিন ইসরো (ISRO) প্রধান দাবি করেছেন  প্রবল বেগে ছুটে আসা গ্রহাণু  শুধুমাত্র পৃথিবীর জন্যই চিন্তার কারণ নয় একই সাথে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও রয়েছে বিরাট সুযোগ। ইসরো প্রধানের কথায় এই গ্রহাণু অধ্যায়ন করলে মহাবিশ্বের গঠন এবং পৃথিবীতে প্রাণীর উৎপত্তি সম্পর্কে বহু অজানা রহস্যের সমাধান পাওয়া যাবে।

সোমনাথ এদিন দাবি করেছেন  বিশ্বব্যাপী গ্রহাণু  গবেষণা এবং তার ক্ষতিকারক প্রভাব টি প্রতিরক্ষা তৈরী করার জন্য আন্তর্জাতিক এই মিশনে  অংশগ্রহণের জন্য ভারত-ও  যোগ্য দাবিদার।এদিন তিনি পরামর্শ দিয়ে জানিয়েছেন এই ধরনের আসন্ন আন্তর্জাতিক মিশনে অংশগ্রহণ করার যোগ্য ভারত। আগামী দিনে অর্থাৎ ২০২৯ সালে গ্রহণও অ্যাপফিস অধ্যয়ন করারও পরিকল্পনা করা হয়েছে।  এদিন ইসরো প্রধান প্রস্তাব দিয়েছেন যে ভারত NASA,ESA, এবং JAXA-র মত মহাকাশ সংস্থা গুলির নেতৃত্বে যৌথ মিশনে সরঞ্জাম বা অন্যান্য ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারবে।

আরও পড়ুন: এবার থেকে লোকাল ট্রেনে চালু এই নিয়ম! বড় সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা হাই কোর্ট

তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে গ্রহাণু কি?

প্রসঙ্গত গ্রহাণু হল এমন একধরনের পাথুরে বস্তু যা আমাদের সৌরজগতে সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ করে। সাধারণত মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যে অবস্থিত প্রধান গ্রহাণু বেল্টেই বেশিরভাগ গ্রহাণু  রয়েছে। এদের আকার কয়েক মিটার থেকে কয়শ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। তবে এগুলো অন্যান্য গ্রহের মত গোলাকার নয়। এই সমস্ত গ্রহাণুর সংঘর্ষ পৃথিবীর উপর বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের উৎপত্তি এবং বিবর্তন সম্পর্কে জানতে প্রয়োজনে তাদের অধ্যায়নও করতে পারেন।

ISRO 3

এদিন গ্রহাণুর  অনুসন্ধান সহ আরো চ্যালেঞ্জিং মিশনে অংশগ্রহণ করার জন্য ভারত পুরোপুরি প্রস্তুত বলে দাবি করেছেন ইসরো প্রধান। তিনি এদিন  বলেছেন যে সূক্ষ্ম মহাকাশযান নেভিগেশন এবং ক্যাপচারের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের দক্ষতা ভবিষ্যতে গ্রহাণু অধ্যয়নের ক্ষেত্রে খুবই জরুরি বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে।  তাছাড়া যে হারে গ্রহাণু গুলি  পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে তার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়েও জোর দিয়েছেন ইসরো প্রধান। একইসাথে গ্রহাণু শনাক্তকরণ এবং প্রতিকারের ক্ষেত্রে মানুষের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও  গবেষণা প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে  বিনিয়োগের বিষয়েও এদিন আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর