বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার দেশে ফের একটি অনবদ্য নজির তৈরি হতে চলেছে। এতদিন যাবৎ আমাদের দেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতুর (Longest Bridge of India) তকমা ছিল আসামের ঢোলা সাদিয়া সেতু বা “ভূপেন হাজারিকা সেতু”-র কাছে। উত্তর-পূর্ব আসামের তিনসুকিয়া জেলায় স্থিত এই সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হল ৯ কিলোমিটারেরও বেশি। তবে, এবার এই সেতুকেই টেক্কা দিতে চলেছে মুম্বইয়ের “ট্রান্স হারবার লিঙ্ক” (Trans Harbour Link)।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, আমাদের অনেকের কাছেই এটা অজানা যে, মুম্বই মূলত অবস্থানগত দিক থেকে একটি বড় দ্বীপ। যা রীতিমতো ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। মুম্বইয়ের তিন বাহুর উত্তরে রয়েছে ভাসাই প্রণালী, পূর্ব দিকে থানে প্রণালী এবং পশ্চিমে রয়েছে সুবিশাল আরব সাগর।
এদিকে থানে প্রণালী বা থানে ক্রিক পেরিয়েই যে মূল ভূখণ্ড রয়েছে সেখানে গড়ে উঠেছে মুম্বইয়ের পার্শ্ববর্তী উপনগরী নবি মুম্বই। এতদিন পর্যন্ত নবি মুম্বই রীতিমতো বিচ্ছিন্ন ছিল মুম্বই থেকে। শুধু তাই নয়, যাতায়াতের ক্ষেত্রে ট্রম্বে, ভাসাই হয়ে পুরোনো ভাসাই ব্রিজ পেরিয়ে পৌঁছতে হত নবি মুম্বই। তবে, এবার খুব সহজেই নবি মুম্বই পৌঁছে যাওয়ার জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ট্রান্স মুম্বই হারবার লিঙ্ক।
যেটি তৈরি করতে করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ খরচও। জানা গিয়েছে, ১৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করে মুম্বই ট্রান্স হারবার লিঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, মুম্বই থেকে এলিফ্যান্টা গুহা যাওয়ায় জন্যে লঞ্চে করে যে সমুদ্র পেরোতে হয়, এই নতুন সেতুর সাহায্যে সেই সমুদ্রই সহজে এবং দ্রুত পেরোনো যাবে।
এদিকে ইতিমধ্যেই এই সেতুটির নামও ঠিক করা হয়েছে। মূলত, “অটলবিহারী বাজপেয়ী ট্রান্স হারবার লিঙ্ক” হিসেবে বিবেচিত হবে এই সেতু। এলিফ্যান্টা দ্বীপের উত্তর দিক বরাবর এগোতে থাকা এই বিশাল সেতুর দৈর্ঘ্য হল ২১.৮ কিলোমিটার। পাশাপাশি, চওড়ায় এটি ২৭ মিটার। এই সেতুতে ছয় লেনের রাস্তা সহ রয়েছে আপৎকালীন নিষ্ক্রমণ পথ। থাকছে ক্র্যাশ ব্যারিয়ারও।
পাশাপাশি, সেতুটির নির্মাণের জন্য কাজে লাগানো হয়েছে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টন “রিইনফোর্সমেন্ট” ইস্পাত, ৮ লক্ষ ৩০ হাজার ঘনমিটার আয়তনের কংক্রিট এবং ৯৬ হাজার টনের “স্ট্রাকচারাল” ইস্পাত। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, “ট্রান্স হারবার লিঙ্ক” নির্মাণের ক্ষেত্রে দেশে প্রথমবার “অর্থোপেডিক ডেক” প্রযুক্তিরও ব্যবহার করা হয়েছে। যেটি নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো সহ জাপানের একটি সংস্থা এবং কোরিয়ার দায়েউ নির্মাণ সংস্থা।