বাংলাহান্ট ডেস্ক: প্রতিদিন প্রযুক্তিগত দিক থেকে ব্যাপক উন্নতি করছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। বিশ্বে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা অনেক কাজই সম্পন্ন হচ্ছে। একাধিক সংস্থা এই নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা শুরু করেছে। এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ভারতীয় রেলও। এমনিতে রেলে ট্রেনের তুলনায় যাত্রীসংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। তাই কনফার্ম টিকিট পাওয়া একটি দুরূহ ব্যাপার। কিন্তু নতুন এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কনফার্ম টিকিটের সংখ্যা বাড়বে। এমনই জানিয়েছে রেল।
ভারতীয় রেলের এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মডিউলটির নাম হল ‘আইডিয়াল ট্রেন প্রোফাইল’। এটি তৈরি করেছে সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম। ভারতীয় রেলের অভ্যন্তরীণ সফটওয়্যার সংস্থা। রেল সূত্রে খবর, এই মডিউল ব্যবহার করলে ওয়েটিং লিস্ট ৫ থেকে ৬ শতাংশ অবধি কমে যাবে। ইতিমধ্যেই এই মডিউলটির সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এ বার থেকে যাত্রীরা বেশি পরিমাণে কনফার্ম টিকিট পাবেন বলেই আশাবাদী রেলের আধিকারিকরা।
তাঁদের মতে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ফলে দূরপাল্লার ট্রেন থেকে রেলের আয় প্রায় ১ কোটি টাকা অবধি বেড়ে যাবে। ট্রেনে কনফার্ম টিকিটের ঘাটতি থাকায় একটি বড় অংশের যাত্রী রেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। যাঁরা পারছেন, তাঁরা দূরপাল্লার সফরের জন্য বিমান ব্যবহার করছেন। এছাড়াও অল্প দূরত্বের সফর করতে বাস ব্যবহার করছেন। এমনই মত রেলের আধিকারিকদের। তাই যাত্রী টানতে এই নয়া কৌশলের ব্যবহার করা হচ্ছে রেলের তরফে।
রেলের এই নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মডিউলকে ২০০টি দূরপাল্লার ট্রেনের তথ্য দেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষার সময় যাত্রীদের সফরের একাধিক নকশা লক্ষ্য করা গিয়েছে। যেমন যাত্রীরা কী ভাবে টিকিট কাটছেন, কত দূরের জন্য টিকিট কাটছেন, কোন স্টেশনের জন্য টিকিটের চাহিদা কতটা ইত্যাদি। পাশাপাশি, বছরের কোন সময় টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে কম ও বেশি থাকে, সেটিও দেখা হয়েছিল। মডিউলটি একটি সফরে কতগুলি হল্ট আছে সেই ভাবে যাত্রীদের আচরণ জেনে সম্ভাব্য টিকিটের কম্বিনেশন তৈরি করেছে।
একটি দূরপাল্লার যাত্রায় যদি ৬০টি স্টপেজ থাকে, তাহলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ১৮০০টি সম্ভাব্য টিকিট কম্বিনেশন জানিয়েছিল। বর্তমান ব্যবস্থায় একটি ১০ স্টপেজের সফরে মাত্র ২৪০টি টিকিট কম্বিনেশন পাওয়া যায়। রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই মডিউল ব্যবহার করে প্রতি বছর কোটি টাকার উপর রোজগার করবে রেল। কনফার্ম টিকিটের সংখ্যা বাড়লে যাত্রী সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে বলে মত তাঁর। একইসঙ্গে সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তিও আরও বেশি উন্নত হবে। তাতে আরও সঠিক ফলাফল দিতে সক্ষম হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।