দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ডিসট্রিক্ট টপার! পেটের টানে পড়াশোনা ছেড়ে শ্রমিক হতে হল মেধাবী পড়ুয়াকে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সম্প্রতি, বিভিন্ন রাজ্যের (Odisha) বোর্ডের পরীক্ষার ফলাফল (Result) সামনে আসছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে একাধিক দরিদ্র পড়ুয়া দুর্দান্ত নম্বর পেয়ে খবরের শিরোনামে উঠে আসছে। পাশাপাশি, সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে তাঁরা যেভাবে সাফল্য অর্জন করছে তার পরিপ্রেক্ষিতে সকলেই তাদের প্রশংসা করছে।

কিন্তু, বর্তমান প্ৰতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একজনের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যাঁর সম্পর্কে জানার পর সবাই চমকে উঠবেন। মূলত, আমরা কর্মা মুদুলির লড়াইয়ের বিষয়টি সকলের কাছে তুলে ধরব। কর্মা ওড়িশার জেলা টপার হলেও সবাই এখন তাঁকে একজন শ্রমিক হিসেবেই জানে। মূলত, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় টপার হওয়ার পর কর্মা যে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তা ক্ষণিকের জন্য ছিল। কারণ দুর্দান্ত নম্বর পেয়েও শ্রমিকের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।

কর্মা দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় শীর্ষস্থান অর্জন করেন: এই প্রসঙ্গে “ইন্ডিয়া টুডে”-র এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, কর্মা ওড়িশার মালকানগিরির বোন্ডা উপজাতির একজন অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং মেধাবী ছাত্রী। তিনি খয়রাপুট ব্লকের মুদুলিপাড়া পঞ্চায়েতের পাডিগুড়া গ্রামের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে কর্মা ৮২.৬৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে ২০২২ সালে ওড়িশা এইচএসই কমার্স স্ট্রিমে জেলার মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করেন। এমতাবস্থায়, জেলাশাসক থেকে শুরু করে রাজ্যপাল পর্যন্ত, কর্মার এই দুর্দান্ত সাফল্যের জন্য প্রশংসা করেন। পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসনও তাঁর আরও পড়াশোনার জন্য সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

সব প্রতিশ্রুতি অপূর্ণ থেকে যায়: এদিকে, ইন্টারমিডিয়েটে জেলায় শীর্ষস্থান অর্জন করার পরে কর্মা কোনোমতে স্নাতকের জন্য ভুবনেশ্বরের রমা দেবী মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছিলেন। তবে, পড়াশোনা শুরু হলেও চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে ছিল তাঁর পরিবার। যার ফলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সমস্যা হতে শুরু করে কর্মার। এদিকে, ভুবনেশ্বরের মতো বড় শহরে থাকাও তার পক্ষে সহজ ছিল না। এমতাবস্থায়, খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়ে।

অগত্যা কোনো উপায় না দেখতে পেয়ে কর্মা তার বাড়িতে ফিরে আসেন। এমনকি, দারিদ্র্যের কারণে তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দিতেও বাধ্য হন। তারপরেই তিনি সংসার চালাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে এইভাবেই সামান্য অর্থ উপার্জন করছেন তিনি।

WhatsApp Image 2023 06 01 at 7.52.54 PM

তবে, কর্মার এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে পৌঁছনোর পরে মালকানগিরির জেলা কল্যাণ আধিকারিক প্রফুল্ল কুমার ভুজবল তাঁর বাড়িতে দেখা করতে আসেন এবং সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি তিনি “ইন্ডিয়া টুডে”-কে আরও জানান যে কর্মা ১৩,০০০ টাকার বার্ষিক বৃত্তি পাচ্ছেন, যার মধ্যে হোস্টেলের জন্য ১০,০০০ টাকা এবং স্কুল ফি বাবদ ৩,০০০ টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কিন্তু এই পরিমাণ অর্থ তাঁর পড়াশোনার খরচের জন্য যথেষ্ট ছিল নয় বলেও জানা গিয়েছে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর