ঐতিহ্যে ভরা কলকাতার প্রাচীনতম পুজো – সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো

স্বপ্ন প্রিয়া ঘোষাল : কলকাতার দুর্গাপুজোর ইতিহাস অনেক সুপ্রাচীন এবং গৌরবময়। বলা হয় কলকাতার প্রাচীনতম পুজো হলো বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো।এই পরিবার থেকেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গোবিন্দপুর, সুতানুটি ও কলকাতা – তিনটে গ্রাম অধিগ্রহণ করেছিল। ইতিহাসের পাতায় এক আলাদা স্থান জুড়ে আছে এই বাড়ির পুজো। ৪০০ বছরের থেকেও প্রাচীন এই জমিদার বাড়ির পুজোয় কৃষ্ণা নবমীর দিন মায়ের বোধন হতো, এবং তারপর একটানা ১৫ দিন চলত পুজো।সম্ভবত ১৬১৫ সালে লক্ষী কান্ত রায় মজুমদারের হাত ধরে এই পুজো শুরু হয়। জমিদার বাড়িতে গ্রামের মানুষের খুব একটা যাতায়াত না থাকলেও পুজোর দিনগুলোতে পুরো গ্রামের লোকেরা  পাত পড়ত দালানে। এখন পুজোর সেই ঝাকজমোক নেই ঠিকই তবে ঐতিহ্য এখনও অক্ষুন্ন। আগে সপ্তমী, অষ্টমী  নবমী তে বলির প্রথা চালু ছিল। অবশ্য বছর কুড়ি র বেশী সময় ধরে সেই প্রথার বিলুপ্তি ঘটেছে। এখন অবশ্য সেই ঐক্য নেই। এখন আট ভাগে এই পরিবারের পুজো হয়।  এই পুজো গুলির ছটি হয় বড়িশাতে – আট চালা, বড়বাড়ি, মেজ বাড়ি, মাঝের বাড়ি, কলিকংকর ভবন এবং বেঙ্কি বাড়ির পুজো। বাকি দুটির একটি হয় বিরাটি তে ও অন্যটি নিমতার পাঠান পুরে।

IMG 20190916 183233

এই বাড়ির দুর্গাপুজোর একটা বিশেষত্ব আছে। সব বাড়িতেই প্রতিমা হয় তিন চলার। একটিতে দুর্গা । অন্য দুটির একটিতে দশ মহাবিদ্যা  ও অপরটিতে রাধা কৃষ্ণ। দূর্গামূর্তিতে শিবের পাশা পাশি থাকে রামচন্দ্রের মূর্তি। বড়ো, মেজো ও নীমতার বাড়িতে দুর্গার বাহন আশ্ব মুখ ঘোড়া। এইসব বিশেষত্ব পুজোয় যোগ করে আলাদা মাত্রা।আগে আদি গঙ্গায় নিজস্ব ঘাটে ঠাকুর কাধে করে বিসর্জন দাওয়া হত কিন্তু বেশ অনেক বছর সেই প্রথা বন্ধ হয়েছে। এখন বিসর্জন হয় বাবুঘটেই।


সম্পর্কিত খবর