সন্তানের চেয়ে প্রিয় পোষ্যের মৃত্যুতে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে মার্বেলের মূর্তি গড়লেন বৃদ্ধ! তৈরি হবে মন্দিরও

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই এমন কিছু বন্ধু থাকে যারা চিরকাল থেকে যায় মনের মণিকোঠায়। এমনকি, তাদের অনুপস্থিতি যেন আবেগাপ্লুত করে তোলে মনকে। কিন্তু, ভাগ্যের পরিহাসে যদি তারা পাড়ি দেয় না ফেরার দেশে, সেক্ষেত্রে তাদের স্মৃতিকে সঙ্গে করেই বেঁচে থাকে মানুষ।

তবে, বন্ধু মানে প্রতিটি ক্ষেত্রেই যে মানুষ হতে হবে তার কোনো মানে নেই। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাড়ির পোষ্যরাও সেই স্থান অবলীলায় দখল করে নেয়। শুধু তাই নয়, একটা সময়ে তারা হয়ে ওঠে পরিবারের সদস্যও। এবার ঠিক সেইরকমই এক পোষ্যের মৃত্যুতে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তামিলনাড়ুর অশীতিপর এক বৃদ্ধ।

শেষজীবনে এসে প্রিয় পোষ্যের মৃত্যু তিনি মেনে নিতে পারেন নি কিছুতেই। আর সেই কারণেই তার স্মৃতিতে মূর্তি বানিয়ে নেন তিনি। এমনকি, এই ঘটনার প্রসঙ্গ ভাইরাল হয়ে যায় নেটদুনিয়াতেও। যা দেখে চোখের কোণ ভিজেছে নেটিজেনদের।

বর্তমানে গোটা বিশ্বের আনাচে-কানাচে ঘটে চলা নানান রকমের খবরাখবর আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অতি সহজেই পেয়ে থাকি। তবে, সেগুলির মধ্যে এমন কিছু ঘটনা থাকে যেগুলিকে দেখে ভারাক্রান্ত হয়ে যায় নেটিজেনদের মন। এই খবরটির ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বরং পোষ্যের প্রতি এমন অমোঘ টান দেখে ওই বৃদ্ধকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন সকলেই।

জানা গিয়েছে যে, তামিলনাড়ুর ৮২ বছর বয়সের মুথু নামের এক বৃদ্ধ বাড়ির সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের থেকেও বেশি ভালোবাসতেন তাঁর পোষ্য কুকুরটিকে। কুকুরটির নাম ছিল টম। ২০১০ সাল থেকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে ছিল টম। কিন্তু, ২০২১ সালে মারা যায় সে। এদিকে, প্রিয় পোষ্যের মৃত্যুতে বিরাট আঘাত পান ওই বৃদ্ধ।

এমতাবস্থায়, টমের প্রতি ভালোবাসাকে সম্মান জানিয়ে তিনি একটি স্ট্যাচু বানিয়েছেন। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে বৃদ্ধের ছেলে মনোজ কুমার জানান, টমের মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে সম্পূর্ণ মার্বেল দিয়ে। এই কাজে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। পাশাপাশি, অদূর ভবিষ্যতে টমের এই মূর্তিকে ঘিরে একটি মন্দির করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, টমের মূর্তির সামনে প্রত্যেকদিন রাখা হয় খাওয়ারও। আসলে ওই মূর্তির মধ্য দিয়েই নিজের পোষ্যকে যেন ফিরে পেয়েছেন এই বৃদ্ধ। এই প্রসঙ্গে ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন, “আমি আমার সন্তানদের থেকেও পোষ্যকে ভালোবাসি। টম আমার কাছে ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ছিল। আমার বাবা এবং ঠাকুর্দারাও কুকুরদের খুব ভালোবাসতেন।” পাশাপাশি, এই হৃদয়বিদারক ঘটনা নেটমাধ্যমে সামনে আসতেই সেখানে নিজেদের আবেগ এবং ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছেন নেটিজেনরা।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর