বিনা অপরাধে জেলে কেটেছে ৪৩ বছর! দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে মুক্তি পেলেন ১০৪ বছরের বৃদ্ধ

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের চারপাশে এমন অনেকেই থাকেন যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াইয়ের সম্মুখীন হন। শুধু তাই নয়, সঠিক বিচারের আশায় তাঁদের অপেক্ষা করতে হয় বছরের পর বছর। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন এক বৃদ্ধের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি দীর্ঘ ৪৮ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে ন্যায়বিচার পেয়েছেন। মূলত, আজ আমরা আপনাদের উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কৌশাম্বী জেলার ১০৪ বছর বয়সী লখন সরোজের বিষয়ে জানাবো।

জেলমুক্ত হলেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) ১০৪ বছরের বৃদ্ধ:

৪৮ বছর আগে গ্রামের এক বিবাদে তাঁকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং ১৯৮২ সালে দায়রা আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। যদিও, ওই রায় তাঁকে ন্যায়বিচারের আশাতে দীর্ঘ লড়াইয়ের পথে অবতীর্ণ করে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ১৯৭৭ সালে কৌশাম্বী (Uttar Pradesh) থানা এলাকার গৌরায়ে গ্রামের বাসিন্দা লখনের প্রভু এবং জগনের সাথে বিবাদ হয়।

old man released after long legal battle Uttar Pradesh.

লখনের মতে, ১৯৭৭ সালের ৬ অগাস্ট, মৃতের তরফে ১০-১২ জন মদ্যপান করে লখনের বাড়িতে আসেন। প্রত্যেকের হাতে লাঠি ছিল। যখন তাঁরা মারামারি শুরু করেন, তখন লখনও লাঠির ব্যবহার করেন। ওই মারামারিতে প্রভু সরোজ আহত হন এবং পরে মারা যান। এই মামলায়, পুলিশ লখনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে এবং তাঁকে জেলে পাঠায়। এমতাবস্থায়, লখন জানান যে, কয়েকদিন পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। ৫ বছর মামলার শুনানির পর, ১৯৮২ সালে, দায়রা আদালত লখনকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

আরও পড়ুন: IPL ২০২৫-এর ফাইনালে কাকতালীয় ঘটনা! কোহলির হাতেই উঠবে ট্রফি? সংকেত পেলেন অনুরাগীরা

পুরো মামলার শুনানির জন্য লখন এলাহাবাদ (Uttar Pradesh) হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। লখনের আইনজীবী বলেন যে, এই মামলায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণের অভাব ছিল এবং আদালত মামলাটি গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করেছে। অবশেষে, ৪৮ বছরের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর, আদালত লখনকে নির্দোষ বিবেচনা করে তাঁকে মুক্ত করে। এদিকে, নিজের বয়স এবং দীর্ঘমেয়াদী আইনি লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে গিয়ে লখন সরোজ বলেন, “আমি কখনও আশা হারাইনি। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আমার কঠোর পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে। এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দিন।”

আরও পড়ুন: থরথর করে কাঁপবে পাকিস্তান! এবার ব্রহ্মসের চেয়েও দ্রুত এবং ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে চলেছে ভারত

কৌশাম্বীর (Uttar Pradesh) অতিরিক্ত জেলা জজ এবং আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব পূর্ণিমা প্রাঞ্জল বলেন, “২০২৪ সালের ডিসেম্বরে হাইকোর্টের ওয়ারেন্টে লখনকে মাঞ্জনপুর জেলা কারাগারে আনা হয়েছিল। কারণ, তাঁর আপিল বিচারাধীন ছিল। আপিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য হাইকোর্টে তাঁর প্রয়োজন ছিল। আমরা সিজিএম আদালতের মাধ্যমে তাঁর পরোয়ানা জারি করে তাকে জেলে পাঠাই।” এদিকে, সসম্মানে মুক্ত হওয়ার পরেও লখন আরও প্রায় ২০ দিন জেলে ছিলেন। কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে পূর্ণিমা বলেন- মুক্তির পরোয়ানা সময়মতো জেলা কারাগারে পৌঁছাতে পারেনি। তাই এই বিলম্ব হয়েছে। জেলা কারাগার মুক্তির পরোয়ানা না পেয়ে কাউকে মুক্তি দিতে পারে না বলেও জানান তিনি।

দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও:

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X