বাংলাহান্ট ডেস্ক : দুই যুগ ধরে চলে আসা রাজার রাজ্যপাটে অবশেষে ছেদ পড়ল। এক্কেবারে রাজকীয় মেজাজেই অমৃতলোকের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিল রাজা। দেশের সবচেয়ে বৃদ্ধ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ২৫ বছর ১০ মাস। ইতিমধ্যেই বন দফতরের তরফে আগামী ২৩ অগাস্ট রাজার ২৬ তম জন্মদিন উপলক্ষে জোরদার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু, রাজার আসন্ন জন্মদিন পালনের ইচ্ছা আর পূরণ হল না বনবিভাগের। তার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল সে। ফলে সোমবার থেকে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি বাঘহীন হয়ে যাওয়ার কারণে আরও খানিকটা জৌলুশ হারালো।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে থেকে জলদাপাড়া বনবিভাগের দক্ষিণ খয়েরবাড়ির রয়্যালবেঙ্গল টাইগার পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকতে শুরু করে এই বৃদ্ধ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি। তার আগে সুন্দরবনের মাতলা নদী পেরোতে গিয়ে কুমিরের কবলে পড়ে রাজার পিছনের বাঁ-পা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বন দফতর ওই বাঘকে আর বন্য পরিবেশে ফেরানোর ঝুঁকি নেয়নি।
জানা গিয়েছে, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের তৎকালীন বন্যপ্রাণী চিকিৎসক প্রলয় মণ্ডল ও বাঘমামা নামে পরিচিত বনকর্মী পার্থসারথী সিনহা অসুস্থ রাজাকে দীর্ঘদিন ধরেই সেবাযত্ন করে কিছুটা সুস্থ করে তুলেছিলেন। রাজার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পার্থসারথী সিনহা বলেন, “সন্তান শোক অনুভব করছি। আর কথা বলতে পারছি না।” রাজার মৃত্যু প্রসঙ্গে বন দফতরের চিকিৎসক উৎপল শর্মা বলেন, “বার্ধক্যজনিত কারণে রাজা কয়েকদিন ধরে খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। অবশেষে গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, ভারতের সবচেয়ে বেশিদিন জীবিত থাকা বাঘ ছিল সে। সবচেয়ে বেশি বছর বাঁচার রেকর্ড গড়ার ক্ষেত্রে আর মাত্র ৪০ দিন বাকি ছিল এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। ‘রাজা’র মৃত্যুর খবর পেয়েই রাজাকে শেষ বিদায় জানাতে দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে হাজির হয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা ও জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও দীপক এম। পুষ্পস্তবক দিয়ে রাজাকে শেষ বারের মত শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় বলেই সূত্রের খবর।