জন্মাষ্টমীর শুভ লগ্নে জেনে নিন এই দিনের ইতিহাস, শ্রী কৃষ্ণের জন্মবৃত্তান্ত

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ জন্মাষ্টমী (Janmashtami), শ্রী কৃষ্ণের (Sree Krishna) জন্ম তিথিকে কেন্দ্র করেই প্রতি বছর কৃষ্ণপ্রেমীরা জন্মাষ্টমী পালন করে থাকেন। ভারত বিভিন্ন ধর্মের দেশ। এখানে বারো মাসে তেরো পার্বন দেখা যায়। বছরের প্রতিটি সময়ই কিছু না কিছু অনুষ্ঠান লেগেই থাকে।

radharaman

৩৩ কোটি দেব দেবীর মধ্যে ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান বিষ্ণুর মানবরূপ শ্রীকৃষ্ণের জন্ম গ্রহণ করেন। তাই এই বিশেষ দিনটিতে বিভিন্ন আনন্দ উৎসবের মধ্যে দিয়ে পালন করে প্রত্যেক কৃষ্ণপ্রেমী মানুষ।

আজ থেকে ৫ হাজার বছর পূর্বে দাপর যুগে যখন রাজা কংসের অত্যাচারে চারিদিকে অরাজকতা, নৃসংশতা, নিপীড়নে মানুষ জর্জরিত, সে সময়ে বাসুদেব এবং দেবকীর ঘরে ভূমিষ্ট হয় কৃষ্ণাবতার। এদিকে আবার দেবকীর অষ্টম সন্তানের হাতে নিজের বিনাশের দৈববাণী যেন কংসরাজাকে সর্বদাই আতঙ্কতি করে রাখত।

barishal 20190820213240

ফলে সে তার বোনের গর্ভে সদ্য ভূমিষ্ট প্রতিটি সন্তানকেই নৃশংস্যভাবে হত্যা করতেন। তবে গর্ভ স্থানান্তরিত করায় রোহিনীর গর্ভে জন্ম নেয় দেবকীর সপ্তম সন্তান বলরাম। কিন্তু সবশেষে অধর্মের বিনাশ ঘটাতে জন্ম হয় কৃষ্ণের। তবে তার প্রাণ রক্ষার্থে ভগবান বিষ্ণুর নির্দেশানুসারে বাসুদেব, কৃষ্ণপক্ষের সেই দুর্বার প্রলয়ের রাতে সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানকে মা যশোদার কাছে রেখে আসেন। পাশাপাশি মা যশোদার কন্যাকে নিয়ে আসেন।

শ্রী কৃষ্ণের পুতনা রাক্ষসী বধ

জন্মগ্রহণ করলেও কৃষ্ণের সন্ধান না পাওয়ায় রাজা কংস, পুতনা রাক্ষসীকে সকল ছয়মাস বয়সী শিশুদের হত্যার আদেশ দেন। রাজা কংসের নির্দেশ মত রাক্ষসী পুতনা স্তন পান করানোর ছলে, একের পর এক নির্মম ছোট শিশুদের হত্যা করতে থাকে। অবশেষে যখন পুতনা কৃষ্ণের সন্ধান পান এবং তাকে স্তন পান করাতে যান, তখন ওই মাত্র ছয়মাস বয়সেই ছোট্ট কৃষ্ণ স্তনপানের মাধ্যমে পুতনার প্রাণ নাশ ঘটায়।

image 1 30

এরপর সময়ের নির্বিশেষে একে একে কালীয়া নাগ, রাজা কংসসহ জগতের নানা দুষ্টকে তারা নানা লীলার মাধ্যমে নিঃশেষ করে সদধর্ম এবং সদকর্মের বার্তা দিয়ে গেছেন ভগবান শ্রী কৃষ্ণ। তিনি বলেছেন, ‘যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত। অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্’।

Janmashtmi festival 2018

বস্তুত এই কারণেই সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের মনে শ্রীকৃষ্ণ আজ বিরাজমান। সেইকারনেই আজ তার জন্মের সেই পবিত্র দিনটিকে কেন্দ্র করে পালিত হয় জন্মাষ্টমী। এইদিন মূলত একটি উঁচু দড়িতে মাখনের হাড়ি ফাটানোর জন্য বালকের দল একটি উঁচু সারি অর্থাৎ মানুষের পিরামিড তৈরি করে। তারপর তারা যৌথ উদ্যোগে সেই হাড়ি ফাটিয়ে, হাড়ির মাখন সকলের মধ্যে বিলি করে।

janmastami 1

পাশাপাশি এদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মবৃত্তান্ত যাত্রা বা গানের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়, যা এই উৎসবের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। এইদিন শ্রীকৃষ্ণের অনুগামীরা সারাদিন উপবাস থেকে ভগবানকে স্নান করিয়ে, দোলনায় দুলিয়ে, তার নিমিত্তে ভোগ রন্ধন করে, তাঁকে উতসর্গ করে তারপর নিজেরা আহার গ্রহণ করেন। বিশেষত এই দিনটিতে মথুরা, বৃন্দবনে এমনকি অনেকের ঘরে ঘরেও ধুমধাম করে পালন করে থাকেন।


Smita Hari

সম্পর্কিত খবর