বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সমগ্র শ্রাবণ ধরেই চলছে বাবা মহাদেবের (Mahadev) আরাধনা। শিব আমাদের সকলেরই পরম শ্রদ্ধার এবং ভরসার স্থল। ভারত বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দেশ। বহু ধর্মের মানুষ এখানে বসবাস করেন। তবে এই ভারতে এমন অনেক বিষয় আছে, যা আজ মানুষের কাছে রহস্য। মানুষ আজ যার কোন সমাধান খুঁজে পায়নি।
আজকে আমরা এমনই একটি শিবলিঙ্গের বিষয়ে আলোচনা করব, যার রহস্য আজও মানুষের কাছে অজানা। যা নাকি বিশ্বের একমাত্র জীবিত শিবলিঙ্গ। একটু একটু করে প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। এর কারণ এখনও মানুষের কাছে অজানা।
মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) খাজুরহে ভগবান শিবের বেশ অনেক কয়েকটি মন্দির রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে সবথেকে আশচর্যকর বিষয় হল, এখানে অবস্থিত মাতঙ্গেশ্বর মন্দিরের (Matangeshvara temple) শিবলিঙ্গটি এখনও বেড়ে চলেছে। গোটা ওই অঞ্চলটিকেই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটও বলা হয়ে থাকে। প্রতিদিন বিশাল পরিমাণে ভক্ত এসে ভিড় জমান ওই মন্দিরে।
এই মন্দিরগুলির মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য মন্দির হল মাতঙ্গেশ্বর মন্দির। যেখানে এমন একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে, যাকে বলা হয় জীবন্ত শিবলিঙ্গ। এই রহস্যময় জীবন শিবলিঙ্গ মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে। এই শিবলিঙ্গ বর্তমানে প্রায় ৯ ফুট দৈর্ঘের। তবে এখনও এই শিবলিঙ্গ প্রতি বছর শরদ পূর্ণিমা তিথিতে এক ইঞ্চি করে বাড়ছে, যা মন্দিরের পুরোহিতরা মেপে থাকেন। বলা হয়, শিবলিঙ্গটি ঠিক যতটা মাটির উপরে আছে, ঠিক ততোটাই মাটির নীচেও রয়েছে। দুদিকেই বাড়ছে এই শিবলিঙ্গ।
পুরাণ মতে বলা যায়, ভগবান শিবের কাছে একটি মার্কট মনি ছিল। এই মনিটি তিনি পাণ্ডবগণের প্রধান যুধিষ্ঠিরকে দিয়েছিলেন। যুধিষ্ঠির আবার এই মনি মাতঙ্গ ঋষিকে দিয়েছিলেন। আবার শোনা যার মাতঙ্গ মুনি ওই প্রচণ্ড ক্ষমতা সম্পন্ন মার্কট মনি রাজা হর্ষবর্মনকে দিলে, তিনি তা মাটির নীচে রেখে দেন।
অবশেষে এই মনি দেখভালের জন্য কাউকে না পাওয়া গেলে, ওই মনি মাটির নীচে যে স্থানে পুতে রাখা হয়েছিল, তার চারিপাশে শিবলিঙ্গের নির্মান করা হয়। যেহেতু এই মনি মাতঙ্গ ঋষি রাজা হর্ষবর্মনকে দিয়েছিলেন, তাই মনিকে মাতঙ্গেশ্বর মনি বলা হয়।
কথির আছে এই মনির কারণেই এই শিবলিঙ্গ এখনও বেড়ে চলেছে। মানুষের ন্যায় প্রতি বছরই এই শিবলিঙ্গ বেড়ে চলেছে। মন্দিরের পুরোহিতদের ধারণা, এই শিবলিঙ্গের উপররের অংশ স্বর্গের দিকে এবং নীচের অংশ ধীরে ধীরে পাতালের দিকে যাচ্ছে। এই ভাবে শিবলিঙ্গের নীচের অংশ যেদিন সম্পূর্ণ পাতালে পৌঁছে যাবে, সেদিন কলিযুগের সমাপ্তি ঘটবে।