বাংলাহান্ট ডেস্কঃ লকডাউনের ধাক্কায় বেলাইন অর্থনীতিকে সঠিক রাস্তায় ফেরাতে ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে মোদি (Narendra Modi) সরকার। ভারতের মতো বৃহৎ জনসংখ্যার দেশে তা সামান্যই। তাছাড়া সেই প্যাকেজ ঘোষণার পর দু’বার বেড়েছে লকডাউনের মেয়াদ। কিন্তু নতুন করে প্যাকেজ আর ঘোষিত হয়নি। দেশের একটা বড় অংশের মানুষ এখন পেটের দায়ে অপেক্ষা করছে সরকারের আর্থিক প্যাকেজের। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে শীঘ্রই। সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহেই ঘোষিত হবে মোদি সরকারের দ্বিতীয় আর্থিক প্যাকেজ।
করোনার জেরে দেশের অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে ভীষনভাবে। আর সেই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের জনছ বিশেষ রিলিফ প্যাকেজ দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পরপর তিন দফার লকডাউনের জেরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার জন্যই এই প্যাকেজ ঘোষণা হতে চলেছে।
‘ইন্ডিয়া টুডে’-তে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, সপ্তাহ খানেক আগেই এই বিষয়ে আলোচনা হয়ে গিয়েছে। যদি এই কয়েকদিনে সংক্রমণের সংখ্যা খুব বেশি না বাড়ে, তাহলে আগামী সপ্তাহেই এই প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।
গত ২ মে শীর্ষস্তরে এই বৈঠক হয়। সেখানেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
শুক্রবার কেন্দ্রের তরফ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, ফিনান্সিয়াল রিলিফ প্যাকেজ দেওয়া হবে। গত ২২ এপ্রিল করোনা পরিস্থিতিতে নতুন আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে মোদী সরকার। স্বাস্থ্যখাতে এমার্জেন্সির জন্য দেওয়া হয় ১৫০০০ কোটি টাকা। তিনটি পর্যায়ে ওই টাকা খরচ করা হবে।
এদিন এই প্যাকেজের কথা ঘোষনা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। তিনি বলেন, ভারতে যাতে যাতে করোনা দ্রুত না ছড়ায়, পরীক্ষা ও চিকিৎসার সবরকম বন্দোবস্ত যাতে থাকে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসার সব সামগ্রী, ওষুধের জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগামিদিনে যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্যও এই টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে।
এই টাকা কাজে লাগানো হবে গবেষণাগারে। মহামারী নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে এই টাকা। পুরোটাই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ছাতার তলায় হবে বলে জানা গিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যেকদিন টেস্টের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে ভারতে।
এর আগে শিল্পের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর ঘোষণা করেন ছোট শিল্পের কথা মাথায় রেখে ৫০,০০০ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ। যা নাবার্ড, সিডবি এবং এন এইচ বি মারফত দেওয়া হবে। নাবার্ড এর মাধ্যমে ২৫,০০০ কোটি টাকা, সিডবি মারফত ১৫,০০০ কোটি টাকা এবং এনএইচ বি মারফত ১০০০০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তবে প্যাকেজ ঘোষিত না হওয়ার কারণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক না হওয়া। অর্থমন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, এই প্যাকেজে এমন কিছু প্রস্তাব আছে যা ঘোষণা হওয়ার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু গত ২ সপ্তাহ ধরে মন্ত্রিসভার কোনও বৈঠক হয়নি। ফলে এই প্রস্তাবগুলি পাশ করানো যায়নি। আগামী বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠক আছে, সেদিনই প্রস্তাবগুলি পাশ করিয়ে ঘোষণা করা হতে পারে দ্বিতীয় প্যাকেজ। সেই উদ্দেশ্যে সোমবারই ব্যাংক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Niramala Sitharaman)। এই প্যাকেজের পরিমাণ কী হবে, তা নিয়ে অবশ্য এখনও ধোঁয়াশা অব্যাহত। সুত্রের খবর আমেরিকা বা ব্রিটেনের মতো জিডিপির ১০ বা ১৫ শতাংশ না হলেও প্রথম প্যাকেজের মতোই বড়সড় প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারে সরকার। বিরোধীরা দাবি জানিয়ে আসছে, এমনভাবে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করতে হবে যাতে সমাজের নিচুতলার ৩০-৪০ শতাংশ মানুষ এর সুবিধা পান।