একসময় বের করে দেওয়া হয়েছিল স্কুল থেকে, আজ নিজের ক্ষমতায় গড়েছেন কোটি টাকার সাম্রাজ্য

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: এই গল্পটি কর্ণাটকের এক দরিদ্র দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের সাফল্যের সিঁড়ি চড়ার। যিনি আজ ৬০ কোটি টাকার বেশি বার্ষিক লাভ করে থাকেন। অথচ ৫৩ বছর বয়সী রাজা নায়েকের শুরুটা হয়েছিল শূন্য থেকে। বর্তমানে তিনি কর্ণাটকের দলিত ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কর্ণাটকের একটি দরিদ্র দলিত পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন রাজা। তারপর তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে বেড়ে ওঠেন। আর্থিক দুরবস্থার কারণে রাজাকে স্কুল ছাড়তে বাধ্য করা হয়। নিয়মিত আয়ের কোনো উৎস না থাকায় রাজা ও তার চার ভাইবোনকে স্কুলে পাঠানো তার বাবা-মায়ের পক্ষে একেবারেই সহজ ছিল না। অবশেষে, ১৭ বছর বয়সে তিনি আর এসব সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। প্রথমে তিনি পরিবারকে কাজ করে টাকা পাঠানোর লক্ষ্যে চাকরির খোঁজে মুম্বাই গিয়েছিলেন। কিন্তু বিফল মনোরথ হয়ে আবার বাড়িতে ফিরে আসেন।

তখন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে বেঁচে থাকার জন্য তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতেই হতো তাকে। এরপর রাজা তিরুপুর থেকে কেনা রপ্তানি-উদ্বৃত্ত শার্ট বিক্রি শুরু করেন এবং ৫০০০ টাকা লাভ করেন। এভাবেই কয়েকদিনের অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে চালানোর পর তিনি ১৯৯৮ সালে একটি ছোট লজিস্টিক ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে তার ব্যবসার প্রভুত উন্নতি হতে থাকে। আজ তার তৈরি করা “এমসিএস লজিস্টিকস” দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি যা আন্তর্জাতিক শিপিংয়ের ব্যবসা করে।

সেই ব্যবসার সাফল্য দেখে বেশ কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে তিনি পাশাপাশি আরও বেশ কিছু ব্যবসা চালু করেন। তার আরেকটি উদ্যোগ হল জালা বেভারেজ প্যাকেটজাত পানীয় জলের ব্যবসা। তিনি পার্পল হ্যাজ ব্র্যান্ড নামে বিউটি সেলুন এবং স্পা এর একটি শাখাও চালু করেছেন। আজ তার ব্যবসার বার্ষিক লাভ ৬০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

এগুলির পাশাপাশি তিনি সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য একটি এনজিও ‘কালনিকেতন এডুকেশনাল সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করেন। তার কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা দেখে তাকে দলিত ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিআইসিসিআই) এর কর্ণাটক শাখার সভাপতি করা হয়। দলিতরা সংরক্ষণের পরেও পিছিয়ে থাকা নিয়ে দেশের অনেক ক্ষেত্রে অনেক উদ্বেগ রয়েছে। এরইমধ্যে রাজার মতো লোকেরা দলিতদের একটি নতুন পচিরয় তৈরি করেছেন যা পুরো প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে।


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর