বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় ক্রিকেট দলে জায়গা পাওয়া যতটা কঠিন, তার চেয়েও সেই দলে নিজেকে ধরে রাখা অনেক বেশি কঠিন। কারণ দলের বাইরে অনেক ক্রিকেটার সবসময়ই থাকে যারা তাদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে দলে আসার দাবি রাখে। ফলে দলে সুযোগ পেয়ে দীর্ঘদিন পারফরম্যান্স করেও অনেকে হারিয়ে যান। এমনই একটি উদাহরণ হল বাঁহাতি অফস্পিনার প্রজ্ঞান ওঝা, যিনি নিজের শেষ টেস্ট ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার পরেও দল থেকে বাদ পড়েছিলেন এবং আর ফিরে আসেননি। এই বোলার একসময় রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সাথে তার জুটি বেঁধে বিপক্ষ ব্যাটারদের রাতের ঘুম কাড়তেন।
একসময় ওঝা এবং অশ্বিনের স্পিন জুটি প্রবল সমস্যায় ফেলেছে সফরকারী দলগুলিকে। তাদের স্পিনের ফাঁসে জড়িয়ে হাঁসফাঁস করতে দেখা গেলে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো দলের ব্যাটিং লাইন আপগুলিকে। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার প্রজ্ঞান ওঝা মাত্র ৩৩ বছর বয়সে অবসর নিতে বাধ্য হয়েছিলেন যা একটি স্পিনারের পক্ষে আশ্চর্যজনক। অনেকেই মনে করেন ভারতীয় দলে রবীন্দ্র জাদেজা-র উত্থান এর সবচেয়ে বড় কারণ।
ওঝা ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে ড্যারেন সামি-র ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে নিজের কেরিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলেছিলেন। ম্যাচে মোট ৮৯ রান দিয়ে দু ইনিংস মিলিয়ে তুলেছিলেন ১০ টি উইকেট। তবে তার পারফরম্যান্স অতটা গুরুত্ব পায়নি, কারণ সেই ম্যাচটি ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সচিন টেন্ডুলকারের শেষ ম্যাচ। ফলে সকলের মনোযোগ একটি দিকেই ছিল।
এরপর ওঝার বোলিং ভঙ্গি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। তার বিরুদ্ধে চাকিংয়ের অভিযোগ ওঠে। যার ফলে ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। এরপর অনেক পরিশ্রম করে ঘরোয়া ক্রিকেটে বল করে নিজের অ্যাকশনে পরিবর্তন এনেছিলেন ওঝা। সৌরভ গাঙ্গুলি সিএবি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন খেলেছেন বাংলার হয়েও। কিন্তু তখন ভারতীয় ক্রিকেটে রবীন্দ্র জাদেজার উত্থান ঘটছে। যিনি ওঝার মতো বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও দক্ষ। স্বাভাবিকভাবেই অশ্বিনের সঙ্গী হিসেবে তিনিই ছিলেন নির্বাচকদের প্রথম পছন্দ। ফলে নিজের শেষ ম্যাচে ম্যাচের সেরা হয়েও মাত্র চার বছরই জাতীয় দলের হয়ে কেরিয়ার শেষ যায় ওঝার। সময়ে সময়ে সীমিত ওভারের ফরম্যাটেও জাতীয় দলের নীল জার্সি গায়ে নেমেছিলেন ওঝা, কিন্তু কোনওদিনই সেখানে নিজেকে নিয়মিত করে তুলতে পারেননি।