দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের ঠিক আগেই রক্তপাত থেকে ঝড়ের ভয়ংকর তাণ্ডব! কিসের সংকেত? প্রশ্ন BJP-র

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) উদ্বোধনের আর কিছুদিনের অপেক্ষা। ৩০ এপ্রিল দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের এই প্রকল্প নিজের হাতেই উদ্বোধন করবেন তিনি। বর্তমানে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। চারিদিকে সাজো সাজো রব। তবে এরই মধ্যে একের পর এক বিপত্তি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দুর্ঘটনা! সব মিলিয়ে বাড়ছে চিন্তা, বাড়ছে আতঙ্ক। একইসাথে উঠছে প্রশ্ন।

মন্দিরের উদ্বোধনের ঠিক আগেই ‘বাধা’? Digha Jagannath Temple

রাজ্যজুড়ে ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। দফায় দফায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার রাতে দমকা ঝোড়ো হাওয়ায় ভেঙে পড়ে নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের অদূরে তৈরি অস্থায়ী লাইটের গেট। জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে দিঘা জুড়ে চন্দননগরের লাইট দিয়ে গেট সাজানো হয়েছিল। সেই লাইটের গেটে ভেঙে তার কাঠামোয় চাপা পড়ে যায় দুটি টোটো। কোনো ক্রমে প্রাণ বাঁচে চালকের। পাশাপাশি লোহার গেট ভেঙে পড়ে গুরুতর আহত হন এক পথচারী। মন্দির উদ্বোধনের আগেই ‘রক্তপাত’। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করেছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য (Amit Malviya)।

ওল্ড দিঘার নেহরু মার্কেটের সামনের ওই লাইটের গেট ভেঙে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। এদিকে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের ঠিক আগেই কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ঈশ্বরের সংকেত দেখছেন অনেকে। একজোটে সুর চড়াতে শুরু করেছেন বিরোধীরাও। বিজেপির অমিত মালব্যর অভিযোগ, যেভাবে হিন্দুদের ভুয়ো সমর্থন দেখিয়ে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ প্রমাণের মরিয়া প্রচেষ্টায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্দির গড়ছেন তা ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর নয়, বরং দুর্নীতি ও রাজনৈতিক স্বার্থের ভিত্তিতে হচ্ছে।


গেরুয়া শিবির প্রশ্ন তুলছে, এটি কি নিছকই প্রকৃতির রুদ্ররোষ, নাকি ঈশ্বরই কোনো সংকেত দিচ্ছেন এই দুর্যোগের মাধ্যমে? বছর ঘুরলেই রয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষিত করতেই মমতার এই প্রকল্প বলে অভিযোগ উঠছে। হীন রাজনৈতিক স্বার্থই এই প্রকল্পের মূল চালিকা শক্তি বলেও তোপ দাগছে বিজেপি।।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/PfhANr_9CRY?si=UUVGHgwnsPsQ0KQX

অমিত মালব্যর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী নিজের ভাষণে এটিকে ‘মন্দির’ বললেও, সরকারি নথিতে এটি ‘সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স’—কারণ সরকার মসজিদ বা মন্দির নির্মাণে কখনই অর্থ ব্যয় করতে পারে না। ভগবানের মন্দির হিন্দুরা স্বতঃস্ফূর্ত ভক্তি থেকে নির্মাণ করেন। একাধিক মহলে প্রশ্ন উঠছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে ঠিক একই রকম মন্দির নির্মাণ কী কারণে? মালব্যর অবশ্য স্পষ্ট দাবি, পুরীর জগন্নাথ ধামের পবিত্রতা ও চৈতন্য মহাপ্রভুর ভক্তিকে অস্বীকার করার এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও পাপাচারপূর্ণ প্রয়াস হল মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্দির নির্মাণ।

আরও পড়ুন: দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে যাব, তবে…! ‘শর্ত’ বেঁধে দিলেন শুভেন্দু

এদিকে কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগই নয়, দিঘার জগন্নাথ দেবের মন্দির উদ্বোধনের আগে বড়সড় দুর্ঘটনাও ঘটে গিয়েছে। শুক্রবার এই মন্দিরের কাজে ‘ফিনিশিং টাচ’ দিতে গিয়ে বড়সড় দুর্ঘটনার শিকার হন এক নির্মাণকর্মী। নির্মাণ কাজের সময় পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন নির্মাণকর্মী আবিদ হোসেন নস্কর। ওই কর্মীর মুখে এবং ডান হাতে আঘাত লেগেছে। দুর্ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে মন্দির চত্বরে। এরই মধ্যে ভয়াবহ কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবেও দুঃসংবাদ।

Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

X