বাংলাহান্ট ডেস্ক : অনেক স্বপ্ন নিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন। চার মাস আগে বদলি হয়েও চলে গিয়েছিলেন মণিপুরে। কিন্তু মণিপুরের ভয়াবহ ধসই শেষ পর্যন্ত কেড়ে নিল তার জীবনদীপ। মণিপুরে দুর্যোগে আক্রান্ত নাগরিকদের বাঁচাতে গিয়ে শহীদ হলেন মালবাজারের নাগরাকাটার জওয়ান শংকর ছেত্রী।
জানা গিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিতে মণিপুরে ভয়াবহ ধসে আটকে পড়েছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের সেনাদের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা সেনারাও। মণিপুরের নোনে জেলায় রেলের একটি নির্মীয়মান প্রকল্পে অন্যান্যদের সাথে শংকরও নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। আচমকা তাদের উপর পাহাড় থেকে বিশাল ধস নেমে আসে । আর ধসের তলাতেই চাপা পড়ে যান তিনি। মারাত্মক জখম হওয়ার জেরে শেষ পর্যন্ত তাকে আর প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয় নি।
সূত্রের খবর, শঙ্করের পরিবারে তারা ৩ ভাই। স্ত্রী এবং পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে সুখে সংসার করা শংকর আগামী অগাস্টে অসুস্থ বাবার অস্ত্রোপচারের জন্য বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা করছিলেন। তার স্ত্রীর কথায়, “মাত্র মাস চারেক আগেই বদলি হয়ে মণিপুরের ডিউটিতে গিয়েছিলেন। ফোনে বার বার বলতেন দুঃশ্চিন্তা না করার জন্য। ঘটনার পর থেকেই শংকরের সাথে আর বাড়ির কেউ আর কোনও যোগাযোগ করতে পারেনি।” তারপরই মৃত্যুসংবাদ আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রিয়জনেরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মণিপুরে ঘটে যাওয়া প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন সেনা সহ ১৪ জন। প্রায় ৫০ জন মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে যাওয়ার পর তাদের এক এক করে বের করে আনার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় ২৩ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলে দেখা যায়, তার মধ্যে ১৪ জন-ই মৃত। আটকে পড়া নিখোঁজদের খোঁজে জারি রয়েছে তল্লাশি অভিযান। সেই নিখোঁজদের তালিকায় রয়েছেন বাংলার আরোও এক সেনা। ১০৭ ইউনিট গোর্খা রাইফেলে কর্তব্যরত বসিরহাটের ঘোড়ারাস গ্রামের জওয়ান মহিউদ্দিন আহমেদের খবর না পেয়ে উদ্বিগ্ন তার পরিবার। সব মিলিয়ে, নিখোঁজ এবং নিহত দুই পরিবারই শোকে, চিন্তায় মূহ্যমান হয়ে পড়েছেন।