নথি প্রকাশ্যে এনে মমতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শুভেন্দু, ফের গুরুতর অভিযোগ বিরোধী দলনেতার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঙ্গে শাসক-বিরোধী দ্বন্দ্ব সর্বদা বর্তমান। যেকোনো বিষয় নিয়েই উভয় পক্ষের মধ্যে চলে প্রশ্নবান, হয় তীর ছোড়াছুড়ি। এবার ফের বিরোধী দলনেতার (Leader of the Opposition ) তোপের মুখে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) বিঁধে সরকারি নথির কপি তুলে ধরলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন লম্বা-চওড়া পোস্ট।

কি লিখলেন বিরোধী দলনেতা? বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক দীর্ঘ পোস্টে তিনি লিখেছেন,” হিঙ্গলগঞ্জের গরীব মানুষের জন্য তিনি নাকি কিছু কম্বল আর শীতবস্ত্র কিনেছিলেন বিতরণ করার জন্য ! কোথায় সেগুলো? সেকি? প্রোগ্রামে না এনে বিডিও-র অফিসে পড়ে আছে? ব্যাস, আর দেখে কে! অমনি উনি ধর্নায় বসে পড়লেন !!! আসলে সারা রাজ্য জুড়েই চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নায় বসতে দেখে উনি আর নিজেকে আটকাতে পারছিলেন না। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন পুরোনো দিনের স্মৃতি খুব মনে পড়ছিল হয়ত। তাই একটা অজুহাত খুঁজছিলেন ধর্নায় বসার। সামনে আবার পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে। হঠাৎ করে ফন্দি আঁটা হয়ে গেল !”

বিজেপি দলনেতা আরও লেখেন, ”ডিএম, বিডিও কে বলির পাঁঠা করলে অসুবিধে কোথায় ! এমনিতেই সরকারি আমলারা ওনার সামনে ঝুঁকতে ঝুঁকতে শিরদাঁড়া এত বাঁকিয়ে ফেলেছেন যে, সামান্য তিরস্কার করলেও, সেটা যদি প্রাপ্য নাও হয়ে থাকে তাহলেও টুঁ শব্দটি করবেন না। তাহলে একটু বকা ঝকা করে ধর্নায় বসে যাওয়া যাবে।”

এদিন টুইটে তিনি লেখেন, ”কিন্তু এই সরকারি বিজ্ঞপ্তি অন্য কথা বলছে। নভেম্বর ২৬ তারিখের এই বিজ্ঞপ্তি, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসকের দফতর থেকে এডিএম সাহেবের পাঠানো। স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হিঙ্গলগঞ্জের, হাসনাবাদের, মিনাখাঁর, সন্দেশখালি – i ও সন্দেশখালি – ii এর বিডিও সাহেবদের যে জেলার গোডাউন (মালগুদাম) থেকে এই কম্বল ও শীতবস্ত্র গুলি ২৮ নভেম্বর সংগ্রহ করতে হবে এবং ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর নিজের ব্লকের মধ্যে অবস্থিত পঞ্চায়েতগুলিতে বসবাসকারী প্রান্তিক জনগণকে বিলি করতে হবে। তা হলে বিষয়টি কী দাঁড়াল! মুখ্যমন্ত্রী যে ২৯ তারিখ মঞ্চ থেকে শীতবস্ত্র বিলি করবেন, তা জেলা প্রশাসন জানত না? এটা হতে পারে? যেখানে পুরো রাজ্য নবন্নর ১৪ তলার অঙ্গুলিহেলনে চলছে সেখানে প্রশাসনিক অনুষ্ঠানের কার্য্যক্রম জেলাশাসককে জানিয়ে রাখেনি মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়?”

 

এরপর কটাক্ষের সুরে তিনি লেখেন , ”মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানস্থলে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের আধিকারিকরাও উপস্থিত থাকেন। তাই জেলা প্রশাসনের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি না জানা কার্যত অসম্ভব। আসলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গরীব ও প্রান্তিক মানুষদের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী ধর্না দিচ্ছেন এই নাটক-টা হঠাৎ উনি বানিয়ে ফেলেন ও মঞ্চস্থ করলেন। তা সে ধর্না নিজের প্রশাসনের বিরুদ্ধেই হোক না! মাননীয়া যদি সরকারে থেকে বিরোধী নেত্রী সত্তার অভাব অনুভব করছেন, তাহলে ওনাকে বলব যে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। আপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে আবার বিরোধী নেত্রী বানিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করবো আমরা”। বিরোধী দলনেতার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দীর্ঘ পোস্ট ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর