বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ৯ আগস্ট থেকে শিরোনামে রয়েছে আরজি কর (RG Kar Case)। সেদিনই হাসপাতালের চারতলার সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ। পরবর্তীতে জানা যায়, ধর্ষিতা হয়ে খুন হয়েছেন তিনি। বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই (CBI)। এই মামলার তদন্তভার হাতে আসার পরেই সিএফএসএলের (CFSL) সাহায্য চেয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত ১৪ আগস্ট নমুনা সংগ্রহের জন্য আরজি করে গিয়েছিল সিএফএসএল। এবার জানা যাচ্ছে, ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণে প্রকাশ্যে এসেছে মারাত্মক তথ্য!
আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar Case) চাঞ্চল্যকর মোড়!
রিপোর্ট বলছে, তিলোত্তমার যোনিদ্বারের নমুনায় অন্য মহিলার উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে! D12S391 মার্কারে, নির্যাতিতার নমুনার সঙ্গে অন্য মহিলার নমুনার মিশ্রণ পরিষ্কার। ‘অন্য’ সেই মহিলার জেনোটাইপ ১৬/২২। এবার এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই মাথাচাড়া দিয়েছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। তাহলে কি আরজি করের ক্রাইম সিনে আরও পুরুষ-মহিলা উপস্থিত ছিলেন? তাঁরা কারা? ইতিমধ্যেই এই প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারী ডাক্তাররা।
এই বিষয়ে বিজ্ঞানী-ডিএনএ (DNA) এক্সপার্ট পার্থপ্রতিম মজুমদার বলেন, ‘এই নমুনাগুলি এসেছে, তার মানে অন্য একজন মহিলার ডিএনএ স্যাম্পেলের সঙ্গে কন্টামিনেশন হয়েছে। সেই মহিলা কে, তিনি কোথা থেকে এলেন সেটা পরিষ্কার নয়’।
জানা যাচ্ছে, আরজি কর (RG Kar Case) হাসপাতালের ক্রাইম সিন থেকে যে ডিএনএ নমুনা মিলেছিল, সেগুলির পরীক্ষার ভিত্তিতেই রিপোর্ট তৈরি করেছে সিএফএসএল। সেগুলি বিশ্লেষণ করেই বিস্ফোরক পর্যবেক্ষণ পার্থপ্রতিম মজুমদারের। রিপোর্ট বলছে, ২৭টির মধ্যে ৩টি নমুনা পরীক্ষার ইঙ্গিতেই নাকি উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য!
আরও পড়ুনঃ জানুয়ারি মাসে কবে কবে মিলবে ছুটি? আগাম তালিকা দেখে বানিয়ে ফেলুন ঘোরার প্ল্যান
এই প্রসঙ্গে ডিএনএ বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, আরজি করের নির্যাতিতার যোনিদ্বার, স্তনবৃন্ত এবং বৃহৎ অন্ত্রের শেষ ভাগে ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার ইঙ্গিত নাকি খানিক গোলমেলে! তিলোত্তমার বৃহৎ অন্ত্রের ডিএনএ নমুনা এক মহিলার। এখানেই শেষ নয়! নমুনার কিছু মার্কারের ইঙ্গিত, তা নির্যাতিতা অথবা ধর্ষণ হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নয়।
রিপোর্ট বলছে, নিপল সোয়াব, অ্যানাল সোয়াব এবং ভালভার মফ- এই ৩টি নমুনা গোলমেলে। বিশেষজ্ঞের কথায়, যে মার্কারগুলি আমরা দেখি, সেগুলির মধ্যে যেটা নির্যাতিতার নয় এবং রায়ের নয়। এছাড়াও আরও কয়েকটি সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলি কোথা থেকে এসেছে তা জানা নেই। এই মামলায় যেহেতু আর কোনও সাসপেক্ট নেই, সেই কারণে এই নমুনাগুলি কোথা থেকে এসেছে আমরা বলতে পারছি না।
বিজ্ঞানী তথা ডিএনএ বিশেষজ্ঞের পর্যবেক্ষণ, আরজি করের (RG Kar Case) নির্যাতিতার স্তনবৃন্তের নমুনার সঙ্গে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়ের ডিএনএ-র সঙ্গে মিলে গিয়েছে। তবে ৪টে ‘অটোসোমাল মার্কার’, অন্য পুরুষের ডিএনএ থাকার কথা বলছে। তবে ওয়াই ক্রোমোজম বিশ্লেষণে সেটা ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয়ের সঙ্গে একেবারে মিলে গিয়েছে। পার্থপ্রতিম মজুমদার বলেন, ‘৪টে মার্কারে যে অতিরিক্ত সিগন্যাল মিলছে, সেটা অন্য কোনও পুরুষের থেকে মিলেছে। সেই পুরুষ কে, সেটা পরিষ্কার নয়’।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট আরজি কর (RG Kar Case) হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ খুনের নারকীয় ঘটনা ঘটেছিল। এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিল গোটা বাংলা। ইতিমধ্যেই এই মামলার ট্রায়াল শুরু হয়েছে। এর মাঝেই সামনে এল এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।