বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতকালই রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচার্য পদে বসার বিষয়ে ঘোষণা করা হয় আর এই খবরটি সামনে আসতেই বর্তমানে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যের সর্বত্র। বহুদিন আগে থেকেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছিল রাজ্য সরকার আর এবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা এবং পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে তাঁকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিল তারা। তবে তাদের এই সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক, তা নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই প্রসঙ্গে এদিন শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী একজন সম্মানীয় ব্যক্তি, তাঁর যথেষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। তাই আচার্য পদ নিয়ে উনি যদি খুশি হন, তাহলে আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে উপকার হবে। তাছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি আচার্য না হন, তাহলেও শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতিকরণ হতেই পারে।” তবে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কি প্রভাব পড়তে চলেছে, সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “উপাচার্য নিয়োগ করার ক্ষেত্রে আচার্যের কিছুটা নিয়ন্ত্রণ তো থাকেই, এগুলি খুব সহজে আটকানো যায় না।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর মতে, “ভবিষ্যতে উপাচার্য নির্বাচনে বিরোধী দিক থেকে যদি কোনরকম মত না নেওয়া হয়, তাহলে এর স্বচ্ছতার প্রসঙ্গে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হবে। এমনকি যাদের নিয়োগ করা হবে, তাদের নিয়োগ বিষয়ক প্রশ্নও উঠে যেতে পারে।”অপর এক শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকার বলেন, “আমাদের রাজ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আমাদের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আচার্য থাকেন, তার উপরে স্থান হয় আচার্য তথা রাজ্যপালের। কিন্তু বর্তমানে এই নিয়ম বদলানোর ফলে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতেই পারেন।”
যদিও এই বিষয়টিকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল শিবির, তবে ইতিমধ্যেই বিরোধীদের সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সিপিএম নেতা সৃজন ভট্টাচার্য যেমন বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্তে অবাক হওয়ার কিছুই নেই ল। এর আগেও তারা ছাত্রভোট তুলে দিয়ে কাউন্সিল তৈরি করার চেষ্টা করেছিল আর বর্তমানে ছাত্র-শিক্ষক এবং উপাচার্যদের উপরেও নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করে চলেছে সরকার।” এই প্রসঙ্গে বিজেপির এক নেতা বলেন, “বাংলায় এখন সব সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা বাংলা একাডেমি অ্যাওয়ার্ড পেতেও দেখছি, আবার আচার্য হতেও দেখা যাচ্ছে। আসলে এসবই ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে করে চলেছেন উনি।”