নকশি কাঁথা শিল্পে অবদানের স্বীকৃতি! বাংলার প্রীতিকণা পেলেন পদ্মশ্রী

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলার প্রীতিকণা গোস্বামী (Pritikana Goswami) নকশি কাঁথা (Nakshi Kantha) শিল্পে অবদানের জন্য লাভ করছেন পদ্মশ্রী পুরস্কার। নকশি কাঁথার সুন্দর কাজের জন্য তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। প্রীতিকণা গোস্বামী সোনারপুরের (Sonarpur) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। বর্তমানে তার হাতের কাজ পাড়ি দেয় বিদেশেও। তিনি সম্পূর্ণ বিনা খরচে সেলাইয়ের কাজ শেখান মহিলাদের। সোনারপুর এলাকায় প্রীতিকণা দেবীর কমলাদেবী কাঁথা সেন্টারের নাম একটি মাইল ফলক।

প্রীতিকণা গোস্বামীর জীবনটা আর পাঁচজন মানুষের মতো সহজ ছিল না। সংঘর্ষ শুরু ১৯৭৩ সাল থেকে। সেই সময় আর পাঁচটা গ্রাম্য মেয়ের মতই অতি সাধারণ ছিল তার জীবন যাপন। এরপর হঠাৎ করে বাবার মৃত্যুতে প্রীতিকণা গোস্বামী এসে দাঁড়ান কঠিন বাস্তবের মাটিতে। তখন প্রীতিকণার বয়স মাত্র ১০ বছর। সেই সময় থেকেই সংসার চলবে কি করে সেই ভাবনা গিলে খেত গোটা পরিবারকে। এরপর কোনরকমে জ্যেঠুর বাড়ি থেকেই পড়াশোনা করেন।

এরপর একদিন হঠাৎই জীবনে এলো পরিবর্তন। বন্ধুর বাড়িতে খানিকটা শখের বসেই একটি শাড়ির উপর সেলাই করেন তিনি। ব্যাস সেই শুরু! জেঠুর বাড়িতে থেকে চলতে থাকে সংসার সংগ্রাম। তার এক বান্ধবী রমা দাসের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে হাত পাকাতে থাকেন সেলাইয়ের কাজে। এরপর তিনি যুক্ত হন পীতাম্বরী নামে একটি সেলাই সংস্থার সাথে। ১৯৭৭ সালে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর চালিয়ে যেতে থাকেন পড়াশোনা। ভর্তি হন সিটি কলেজে।

Pritikana

এরপর ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রাফট কাউন্সিল থেকে প্রথম অর্ডার আসে ১৯৯০ সালে। এরপর ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকে তার সেলাই যাত্রা। ২০০১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের হাত থেকে নেন জাতীয় পুরস্কার। আন্তর্জাতিক বাজারে যথেষ্ট কদর থাকা নকশিকাঁথার কাজ নিয়েই নিরলস পরিশ্রম করছেন তিনি। এখনো তিনি তার নকশি কাঁথার শিল্প ছড়িয়ে যাচ্ছেন আগামী প্রজন্মের মহিলাদের হাতে।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর