বাংলা হান্ট ডেস্ক: তীব্র বৃষ্টিতে রীতিমতো ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে পড়শি দেশ পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, সেখানকার বন্যা পরিস্থিতিও ক্রমশ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার মানুষ রীতিমতো লড়াই করছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে। এই প্রসঙ্গে সে দেশের দুর্যোগ ও স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা জিয়াউল্লাহ ল্যাঙ্গোভ গত শনিবার জানিয়েছেন, বেলুচিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশে, ক্রমবর্ধমান বন্যায় ভেসে গিয়ে মহিলা ও শিশুসহ মোট ৫৭ জন মারা গিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, ল্যাঙ্গোভ আরও জানিয়েছেন, অত্যধিক ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের আটটি বড় বাঁধ কার্যত ভেঙে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বৃষ্টি ও বন্যার দাপটে বাড়িঘর ধসে গিয়ে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি, এখনও প্রবল বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একটি জেলা সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাড়ি ধসে পড়ায় সেখানে ছয় বছরের এক শিশুসহ মোট দু’জন মারা গেছেন এবং চারজন আহত হয়েছেন। উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এমনকি, দেশের সবচেয়ে বড় শহর করাচির বিশাল অংশও এখন জলের তলায় রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানের নৌ বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে যে, তারা বেলুচিস্তানে নাগরিকদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাঁদের খাদ্য ও বিশুদ্ধ জল সরবরাহের কাজে হাত লাগিয়েছে। উল্লেখ্য যে, ২০১০ সালেও, ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, ভয়াবহ ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ প্রভাবিত হয়েছিলেন। পাশাপাশি, সমগ্ৰ দেশের প্রায় পাঁচভাগ জলের তলায় চলে যায়।
জানিয়ে রাখি, মৌসুমীজনিত বৃষ্টি, দক্ষিণ-এশিয়া জুড়ে কৃষকদের জন্য একটি লাইফলাইন হিসেবে কাজ করে। যদিও, তার পাশাপাশি, এর প্রভাবে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতির সম্মুখীনও হতে হয় বিভিন্ন দেশকে। এমনকি, ঘটে প্রাণহানির ঘটনাও। ইতিমধ্যেই পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের মতে জানা গিয়েছে, বিগত বছরের তুলনায় শুধুমাত্র এই মরশুমেই পাকিস্তানে এখনও পর্যন্ত ৮৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, প্রতিবেশি দেশ আফগানিস্তানেও প্রবল বন্যায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত মাসেই ব্যাপক বৃষ্টির কারণে উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশ ও ভারতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। এমতাবস্থায়, একজন সরকারি বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশের বন্যাকে ২০০৪ সালের পর সম্ভাব্যভাবে দেশের সবচেয়ে খারাপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এদিকে, পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন যে, জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তন আরও বিপর্যয়কে ডেকে আনতে পারে।