ভারতের পরামর্শ না মেনে নিজের পায়েই কুড়ুল মারল পাকিস্তান! এখন ভোগ করতে হচ্ছে পরিণতি

বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসের পথ থেকে সরে না আসে, তাহলে তারা শেষ হয়ে যাবে। সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশকে এই পরামর্শই দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এরই মধ্যে ফের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনদের নিশানায় রয়েছে পাকিস্তান। তালিবানি আদর্শে গড়ে ওঠা তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

আফগানিস্তানে তালিবানি শাসনের সমর্থন করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু এই মুহূর্তে পাকিস্তানেই সন্ত্রাসবাদী হামলা চালাতে তৎপর তেহরিক-ই-তালিবান। তাদের সঙ্গে পাকিস্তানের শান্তির বার্তা শেষ হয়ে গিয়েছে। এখনও অবধি পাকিস্তানে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা চালিয়েছে টিটিপি। জানা গিয়েছে, গত ৩-৪ মাস ধরে টিটিপি-র সঙ্গে শান্তি বজায় রাখার আলোচনা চালাচ্ছিল পাকিস্তান। 

Tehreek-e-Taliban

গত ২৮ নভেম্বর সেই আলোচনা শেষ করে টিটিপি। শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সংগঠনের সমস্ত সন্ত্রাসবাদীকে পাকিস্তানের উপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছে টিটিপি। গত ১৮ ডিসেম্বর খাইবার পাখতুনখওয়ার বানু অঞ্চলে একাধিক নিরাপত্তা আধিকারিককে অপহরণ করে বন্দি বানিয়ে রেখে দিয়েছিল সন্ত্রাসবাদীরা। ঘটনার ৪০ ঘণ্টা পর পাকিস্তান সেনা একটি স্পেশাল অপারেশনের মাধ্যমে বন্দিদের উদ্ধারে নামে।

অপারেশনের পর পাকিস্তান সেনার দাবি, তারা ৩৩ জন টিটিপি সন্ত্রাসবাদীকে খতম করে সব অপহৃতকেই উদ্ধার করেছে। এর পাঁচদিন পর ২৩ ডিসেম্বর ইসলামাবাদে একটি বড়সড় আত্মঘাতী হামলা চালায় টিটিপি। একটি পুলিশ হেডকোয়ার্টারের সামনে এই হামলাটি চলে। চেক পোস্টে একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। সেই গাড়ির পিছনের সিটে বসে থাকা এক জঙ্গি নিজেকে বোমের সাহায্যে উড়িয়ে দেয়। পরে জানা যায়, হামলাকারীর উদ্দেশ্য আসলে অন্য কিছু ছিল। তাই এই হামলা একপ্রকার অসফল।

pakistan army

যদিও এই আত্মঘাতী হামলায় এক নিরাপত্তা রক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও ১০ জন গুরুতর আহত। এই হামলার দু’দিন পরত২৫ ডিসেম্বর বালোচিস্তানে পর পর ৯টি হামলা চালায় টিটিপি। সেই হামলায় ৬ জন নিরাপত্তা আধিকারিক প্রাণ হারান। পাকিস্তান ও টিটিপি-র মাঝে শান্তিরক্ষার আলোচনা চলাকালীন এই জঙ্গি সংগঠন তাদের সন্ত্রাসবাদীদের একত্র করছিল। পাশাপাশি, নতুন হামলার ছকও কষা হচ্ছিল এই সময়েই। এই কারণেই আলোচনা শেষ করার কয়েক দিন পর থেকেই হামলা চালু হয়।

terrorist

পাকিস্তানে হঠাৎ জঙ্গি হামলা বেড়ে যাওয়ায় একাধিক দেশ চিন্তিত। একাধিক দেশ পাকিস্তানে থাকা সে দেশের নাগরিকদের বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ও সৌদি আরব পাকিস্তানে থাকা নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলেছে। প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় পরেই যেন আরও শক্তিশালি হয়েছে তেহরিক-ই-তালিবান। আফগানিস্তানে শারিয়া আইন লাগু করতে সক্ষম হয়েছে তালিবান। 

পাকিস্তানেও একই জিনিস চাইছে টিটিপি। ফলে বিভিন্ন সময়েই পাকিস্তানে এই দাবিতে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়েছে টিটিপি। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে তেহরিক-ই-তালিবান গঠিত হয়। এটিকে পাকিস্তান তালিবানও বলা হয়ে থাকে। পাকিস্তানে শারিয়া আইন কার্যকর করতে একাধিক বার সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়েছে এই সংগঠন। 


Subhraroop

সম্পর্কিত খবর