বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে একের পর এক সঙ্কটে জর্জরিত পড়শি দেশ পাকিস্তান (Pakistan)। বিগত কয়েক বছর ধরেই ওই দেশটি চরম আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। এমনকি অবস্থায় এতটাই বেগতিক হয়ে গিয়েছে যে, আর্থিক সাহায্যের জন্য বিভিন্ন জায়গায় হাত পাততে হয়েছে পাকিস্তানকে। তবে এবার তারা পড়েছে আরেক দোদুল্যমান অবস্থায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে রীতিমতো প্রিয় বন্ধুকে বেছে নেওয়ার পন্থা অবলম্বন করেছে তারা।
বিষয়টা একটু খুলে বলা যাক। মূলত, কিছুদিন আগে পর্যন্তও পাকিস্তান তার দুই বন্ধু অর্থাৎ আমেরিকা এবং চিনকে সমান গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। শুধু তাই নয়, অতীত ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে বহু আন্তর্জাতিক সঙ্কটে এই দুই মহাশক্তিধর দেশকে আলোচনার টেবিলে বসাতে কার্যত মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে পাকিস্তান। তবে, এবার বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামাবাদ ক্রমশ বেজিং ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। যার ফলে, তাদের দূরত্ব বাড়ছে ওয়াশিংটনের সাথে। এমতাবস্থায়, কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা পাকিস্তানের এহেন পদক্ষেপে খুব একটা বুদ্ধিমত্তার ছাপ দেখছেন না।
পাশাপাশি, পাকিস্তানের বিভিন্ন পদক্ষেপও বুঝিয়ে দিচ্ছে যে তারা চিনকে প্রাধান্য দিয়ে আমেরিকাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গত মার্চে “ডেমোক্র্যাসি সামিট” নামে একটি গণতন্ত্র সংক্রান্ত সম্মেলন হয়। যেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় ১২০ টি দেশকে। এদিকে, এই সম্মেলনের সহ-উদ্যোক্তা ছিল আমেরিকা। এমতাবস্থায়, ওই সম্মেলনে পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, তারা তা প্রত্যাখ্যান করে। জানা গিয়েছিল যে, তাইওয়ানকে ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিবাদ জানিয়েই নাকি পাকিস্তানের এই আমন্ত্রণ বয়কট করে।
আরও পড়ুন: ভারত-মলদ্বীপ বিতর্কের আবহেই মোদীর মাস্টারস্ট্রোক! মুইজ্জুকে পাঠালেন “বিশেষ বার্তা”, জানালেন….
অপরদিকে, গত সপ্তাহেই পাকিস্তান চিনের “ডেমোক্র্যাসি: শেয়ারড হিউম্যান ভ্যালুজ” শীর্ষক সম্মেলনে যোগদান করেছিল। এমন পরিস্থিতিতে, ইসলামাবাদ এই কূটনৈতিক সিদ্ধান্তকে বেজিং ঘেঁষা হিসেবে মনে করছেন অনেকেই। এদিকে, এর আগে একাধিকবার আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল পাকিস্তান। কিন্তু এখন, পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ দাবি করেছেন, গণতন্ত্রের অভাবের কথা বলে আমেরিকা বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করছে।
আরও পড়ুন: চিনকে পাত্তাই দিচ্ছে না Apple? বেমালুম বাজারে আনল সেকেন্ড হ্যান্ড প্রোডাক্ট
এদিকে, অনেকে এটাও মনে করছেন যে, অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে থাকা চিন অনেকাংশেই চিনের ওপরে নির্ভরশীল। শুধু তাই নয়, পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে পাকিস্তানি বিপুল বিনিয়োগ করেছে তিনি। যদিও এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের একাংশে ক্ষোভও দেখা গিয়েছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, পাকিস্তানের চিনের প্রতি নির্ভরশীল বিদেশ নীতির বিষয়ে সেদেশের অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এর পাশাপাশি, চিনের ঋণের ফাঁদে দেশটির অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হচ্ছে কিনা এই বিষয়েও প্রশ্ন উঠছে। অন্যদিকে, সন্ত্রাসবাদ বন্ধের বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে বারংবার সতর্ক করেছে আমেরিকা।। শুধু তাই নয়, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা আগ্রাসনের প্রতিও আমেরিকা নজর রেখেছে।