বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে পাকিস্তান (Pakistan) ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। শুধু তাই নয়, যত দিন এগিয়েছে ততই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে সেদেশে। এমতাবস্থায়, এবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (International Monetary Fund) সতর্ক করেছে যে, এই “কাঙাল” দেশটি “চরম বিপদের” সম্মুখীন হয়েছে।
মূলত, IMF তার সর্বশেষ রিপোর্ট জানিয়েছে যে, ৩ বিলিয়ন ডলারের নতুন ঋণ ছাড়াও আসন্ন নির্বাচনের পরে পাকিস্তানের আরও একটি প্যাকেজের প্রয়োজন হবে। ঠিক এই আবহে এবার জানা গিয়েছে যে, IMF-এর কাছ থেকে ঋণের জন্য রীতিমতো কাতর শেহবাজ শরীফ সরকারকে ৬ মাস ধরে অপেক্ষার পর এই সংস্থা অত্যন্ত কড়া শর্তে ঋণ দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানের উপর প্রকাশিত ১২০ পৃষ্ঠার রিপোর্টে IMF জানিয়েছে যে, দীর্ঘ সময়ের জন্য অর্থপ্রদানের ভারসাম্য বজায় রাখতে, পাকিস্তানের বর্তমান ঋণের পাশাপাশি আরও অর্থের প্রয়োজন হবে। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ও স্টেট ব্যাঙ্কের গভর্নরের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট জারি করা হয়েছে। IMF জানিয়েছে যে, ভবিষ্যতে দেওয়া দ্বিতীয় প্যাকেজ পাকিস্তানে স্থিতিশীলতা আনবে। এদিকে, IMF তার মূল্যায়নে বলেছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলি অত্যন্ত জটিল এবং বহুমাত্রিক।
IMF-এর শর্তের প্রভাব দৃশ্যমান: পাশাপাশি, IMF জানিয়েছে, পাকিস্তানকে নিয়ে বিপদ খুব বেশি। সংস্থার মতে, বিষয়টি সমাধানের জন্য যে নীতিগুলির ওপর সম্মতি রয়েছে সেগুলি দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এছাড়াও, বিদেশি অংশীদারদের কাছ থেকে লাগাতার আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হবে। IMF বলেছে, ঝুঁকি কমাতে IMF-এর কর্মসূচির সিদ্ধান্তমূলক এবং টেকসই বাস্তবায়ন প্রয়োজন হবে। এদিকে, IMF-এর সঙ্গে চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৫ টাকা বাড়িয়েছে শেহবাজ সরকার।
শুধু তাই নয়, বর্তমানে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির হার চরমে পৌঁছলেও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪০ পয়সা। এছাড়াও, পাকিস্তানে এখন ট্যাক্সের হার বাড়ানোর প্রস্তুতি চলছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, পাকিস্তানের বর্তমানে ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণ রয়েছে। যার মধ্যে শুধুমাত্র চিনের কাছ থেকেই ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ রয়েছে।
এদিকে, চলতি অর্থবর্ষে পাকিস্তানকে ২৫ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ ফেরত দিতে হবে। এমতাবস্থায়, IMF, চিন, সৌদি আরবের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার পর পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার কিছুটা বাড়লেও এখনও তা খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। আবার, চলতি বছরেই পাকিস্তানে নির্বাচন হওয়ার কথা, যার ফলে সেখানেও কোটি কোটি টাকা খরচ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।