ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন! চিনের চাপে চিড়ে চ্যাপ্টা হতে বসেছে “কাঙাল” পাকিস্তান

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার শখ! পাকিস্তানের (Pakistan) বর্তমান পরিস্থিতি দেখে কার্যত এমনটাই বলছে ওয়াকিবহাল মহল। প্রবল আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ। এর মধ্যে গ্বদরকে আঁকড়ে ধরে যাও বা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল পাক (Pakistan) প্রশাসন, এখন চতুর্দিক থেকে চাপে কার্যত নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়েছে এই রাষ্ট্রের। গ্বদর ধীরে ধীরে ক্ষয় করছে পাকিস্তানকে।

গ্বদর নিয়ে বড় সমস্যায় পাকিস্তান (Pakistan)

বালুচিস্তানের বন্দর শহর গ্বদর। এই শহরটিকে ‘দ্বিতীয় দুবাই’ বানানোর পরিকল্পনা ছিল পাক প্রশাসনের। এই বন্দর শহরকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যিক দিক দিয়ে ফুলেফেঁপে উঠতে পারত পাকিস্তান (Pakistan)। এখানে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর হওয়ার কথা ছিল। অন্তত তেমনটাই ভেবেছিলেন প্রশাসনিক কর্তারা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে হল উলটো। এখন গ্বদরের জন্য জলের মতো টাকা যাচ্ছে পাকিস্তান (Pakistan) সরকারের। এই বন্দর শহরকে ঘিরে জটিলতা ক্রমেই বাড়ছে যা সমাধানের কোনো উপায়ই মিলছে না।

Pakistan is going land in trouble for china

গ্বদরকে নিয়ে কী কী জটিলতা রয়েছে: গ্বদরকে নিয়ে সমস্যার একাধিক কারণ রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই স্থানের জলবায়ু পরিবর্তন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে পাকিস্তানের (Pakistan) সামনে। একেই শুষ্ক আবহাওয়া, তার উপর দিন দিন যেভাবে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞ মহল। প্রতি বছরই প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে এই স্থানে। ২০২৪ এই টানা ৩০ ঘন্টার বৃষ্টিতে এই অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে রয়েছে স্থানীয় বিদ্রোহ। পাকিস্তান (Pakistan) থেকে আলাদা হয়ে পৃথক দেশ হওয়ার জন্য পাক ফৌজের সঙ্গে প্রায়ই সংঘাতে জড়াচ্ছে বালুচ লিবারেশন আর্মি। তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (Pakistan) সঙ্গেও হাত মিলিয়েছে তারা। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে ইসলামাবাদেও গৃহযুদ্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আরো পড়ুন : বাবা মায়ের স্বপ্নপূরণে ব্যর্থ, আত্মঘাতী স্কুল পড়ুয়া, আক্ষেপ করে বিশেষ আর্জি জানালেন আদানি

চোখ রাঙাচ্ছে চিনও: সমস্যার কিন্তু এখানেই শেষ নেই। ২০১৫ সালে চিনের সঙ্গে ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর’ প্রকল্প শুরু করেছিল পাকিস্তান (Pakistan)। এতে চিনের শিনজিয়ান প্রদেশের কাশগড় থেকে বালুচের গ্বদর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু চিনা বিনিয়োগের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় স্থানীয় বালুচ নাগরিকরা। উন্নত প্রযুক্তির জন্য তাদের রোজগার বন্ধ হওয়ার অভিযোগ করেছেন তারা। এদিকে প্রকল্পে কর্মরত চিনা কর্মীদের উপরে লাগাতার আঘাতের ফলে চিনের ক্ষোভের মুখে পড়েছে পাকিস্তান (Pakistan)। শুধু তাই নয়, ‘নিউক্লিয়ার ট্রায়েড’ প্রযুক্তি নিয়ে চিনকে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগও উঠেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে।

আরো পড়ুন : চাপ বাড়বে বাংলাদেশের! চিনের আগ্রাসনেও পড়বে লাগাম, মোদী-ট্রাম্প বৈঠকেই আসল ধামাকা

ওই প্রযুক্তি পেলে তবেই চিনের হাতে তুলে দেওয়া হবে গ্বদর বন্দর, এমনি নাকি শর্ত রাখা হয়েছে। কিন্তু এতে সাফ ‘না’ করেছে চিনা সরকার। অন্যদিকে গ্বদরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে চিনের ‘উপহার’ বলেও বেকায়দায় পড়েছে পাকিস্তান (Pakistan)। চিনের তরফে স্পষ্ট বলা হয়েছে, উপহার নয়, মোটা অঙ্কের ঋণ দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। এই প্রকল্পের জন্য চিনের থেকে ঋণ নিয়েই ফেঁসেছে পাকিস্তান। একাধিক সমস্যায় গ্বদরে নির্মাণকাজ কাজ পেছোনোর সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে চলেছে সুদের হার। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের এখন সাপের ব্যাঙ গেলার মতো অবস্থা!

Niranjana Nag
Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর