বাংলা হান্ট ডেস্ক: চলতি বছরটা মোটেও ভালো কাটল না ভারতের পড়শি দেশ পাকিস্তানের (Pakistan)। কখনও প্রবল বন্যার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের হানা আবার কখনও বা অর্থনৈতিক সঙ্কট, কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছে না পাকিস্তান। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার পাকিস্তানে খাদ্য সঙ্কট ক্রমেই তীব্র হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে সেদেশের অবস্থা এতটাই করুণ হয়ে গিয়েছে যে, বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারে টান পড়ায় করাচি বন্দরে পচে নষ্ট হচ্ছে টন টন পেঁয়াজ।
যার ফলে পাকিস্তানে পেঁয়াজের দাম মাত্রাতিরিক্ত হারে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ১৭৫ টাকা ছাড়িয়েছে। এমতাবস্থায়, খুচরো বাজারে কেজি প্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়। ঠিক সেই আবহেই করাচি বন্দরে নষ্ট হতে চলেছে ২৫০ কন্টেনার পেঁয়াজ। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১০.৭ মিলিয়ন ডলার।
তবে, শুধু পেঁয়াজই নয় এছাড়াও, ৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৪৮০ ডলার মূল্যের আদার পাশাপাশি ০.৬ মিলিয়ন টন সয়াবিন এবং ২.৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের রসুনও করাচি বন্দরে নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করেছে এক পাক সংবাদমাধ্যম। এদিকে, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরাসরি সরকারকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলি। এই প্রসঙ্গে সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সেদেশের চলমান সঙ্কট মেটাতে আমদানির মাধ্যমে খাদ্যশস্য সরবারহের ক্ষেত্রে যে পরিমান বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন, তা সরকারের ভাঁড়ারে একদমই নেই।
এদিকে, বন্দরে বিপুল পরিমান পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল এক্সপোর্টস-ইমপোর্টস অ্যান্ড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ওয়াহিন আহমেদ জানিয়েছেন, বন্দরে এইভাবে পেয়াঁজ আটকে থাকার ফলে দেশের অভ্যন্তরে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে কিছুদিনের মধ্যেই এই দাম আমজনতার নাগালের বাইরেও চলে যাবে বলে মনে করেছেন তিনি।
এমতাবস্থায়, বন্দরে আটকে থাকা আমদানি করা পেঁয়াজের ক্ষেত্রে সরকারের তরফে দ্রুত ছাড়পত্র না মিললে দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুলেমান চাওলাও। পাশাপাশি, পাক অর্থভাণ্ডারে বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার কম থাকায়, সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এমনিতেই পাকিস্তানে তীব্র আর্থিক সঙ্কটের কারণে সেখানকার সাধারণ মানুষ পোল্ট্রি ও দুগ্ধজাত দ্রব্য কিনতেই পারছেন না। ঠিক সেই আবহেই আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্যের ওপর এহেন জটিলতা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে দিতে পারে।