বাংলাহান্ট ডেস্ক: আর্থিক সমস্যা নিয়ে চূড়ান্ত খারাপ অবস্থা পাকিস্তানের (Pakistan)। বিদেশ থেকে সাহায্য চেয়েও পাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (IMF) তাদের ঋণ দিতে অস্বীকার করেছে। তবে এই প্রথমবার তাদের এমন খারাপ অবস্থা হয়নি। এর আগে বহু বার অন্যের কাছে হাত পেতেছে তারা। ২০১০ সালেও একবার বিপদে পড়েছিল পাকিস্তান। একটি ভয়াবহ বন্যায় খারাপ অবস্থা ছিল তাদের।
সেই সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইউসুফ রাজা গিলানি (Yousuf Raza Gilani)। তাদের আর্থিক অবস্থা তখনও ভাল ছিল না। তুরস্ক পাকিস্তানের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবেই পরিচিত আন্তর্জাতিক মহলে। তাই বন্ধুর বিপদে সাহায্য করেছিল তারা। বন্যাবিধ্বস্ত পাকিস্তানকে নিজের গলার হার দান করেছিলেন তৎকালীন ফার্স্ট লেডি। তুরস্কের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজাব তাইয়াব এর্দোয়াঁ (Rajab Tayyab Erdogan) ও তাঁর স্ত্রী এমিন এর্দোয়াঁ সাহায্য করেছিলেন পাকিস্তানের।
কিন্তু অদ্ভুতভাবে ফার্স্ট লেডির দেওয়া সেই হার উধাও হয়ে যায়। খবর পেয়ে পাক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তভার দেন তৎকালীন অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলি খান। তদন্তচলাকালীন প্রধানমন্ত্রী গিলানি স্বীকার করেন যে হারটি তাঁর কাছে রয়েছে। ২০১৫ সালে FIA প্রধানমন্ত্রীকে তুরস্কের ফার্স্ট লেডির হার ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
বলা হয়, ৩ দিনের মধ্যে হার ফেরত না দিলে গিলানির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। পাকিস্তানি মিডিয়া জানিয়েছিল, গিলানি ওই হারটি নিজের কাছে রাখার কথা স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, “এটি আমার বোনের হার। তাই আমার কাছে আছে।” গিলানি বলেছিলেন, তুর্কি ফার্স্ট লেডি ওই হারটি দেওয়ার পর সিন্ধ প্রদেশের একটি বন্যা ত্রাণ শিবিরে যেতেন তিনি। সেখানে একটি যুগলের বিয়ে ছিল।
প্রধানমন্ত্রী সেই পাত্রীকে ওই হারটি উপহার হিসেবে দিতে চেয়েছিলেন। ওই হারটির বাজার মূল্য সেই সময় ছিল ২ লক্ষ পাক রুপি। কিন্তু তিনি দেখেন, আটজন মেয়ের বিয়ে হচ্ছে ওইদিন। সে জন্য হারটি নিজের কাছে রেখে দিয়ে প্রতিটি যুগলকে ২ লক্ষ পাক রুপি করে দিয়েছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, ২০১০-এর বন্যায় পাকিস্তানের প্রায় ২০ শতাংশ জমি জলের তলায় চলে যায়। বন্যার ফলে দেখা দেয় খাদ্যসঙ্কট। প্রায় ২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। একইসঙ্গে ২ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন এই বন্যায়।