বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের (India) বিরুদ্ধে বিষদগার অব্যাহত রেখেছে পাকিস্তান (Pakistan)। ওই প্রতিবেশী দেশ ফের জাতিসংঘে (United Nation) রাম মন্দিরের (Ayodhya Ram Mandir) প্রসঙ্গ তুলল। তবে, এবার তারা এমন জবাব পেয়েছে যে তাদের মুখ রীতিমতো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাকিস্তানের দেওয়া বিবৃতিকে “ধ্বংসাত্মক ও ক্ষতিকর” বলে বর্ণনা করেছে ভারত। এছাড়াও পাকিস্তানকে তীক্ষ্ণ জবাব দিয়ে ভারত জানিয়েছে যে, সব দিক থেকে পাকিস্তানের সবচেয়ে সন্দেহজনক ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, জাতিসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুনির আকরাম তাঁর “শান্তির সংস্কৃতি” বিষয়ক ভাষণে কাশ্মীর, নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন এবং ভগবান অযোধ্যার রাম মন্দিরের মতো বিষয়গুলি উল্লেখ করে ভারতের বিরুদ্ধে দীর্ঘ মন্তব্য করেছিলেন। যেটির পরিপ্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ।
কাম্বোজ বৃহস্পতিবার বলেন, “আমরা শেষ কথাটি বলতে চাই যে, আমরা যখন এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে শান্তির সংস্কৃতি গড়ে তোলার চেষ্টা করছি সেই সময়ে আমাদের ফোকাস গঠনমূলক সংলাপের দিকে থাকে। তাই আমরা এমন একজন প্রতিনিধির মন্তব্যকে উপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যাঁর কেবল শিষ্টাচারের অভাবই নেই বরং, তাঁর ধ্বংসাত্মক এবং ক্ষতিকারক প্রকৃতির কারণেও তিনি আমাদের সমষ্টিগত চেষ্টা বাধাগ্রস্ত করেন।”
তিনি বলেন, “আমরা প্রতিনিধিকে শ্রদ্ধা ও কূটনীতির কেন্দ্রীয় নীতিগুলি মেনে চলার জন্য দৃঢ়ভাবে উৎসাহিত করব। যা সর্বদা আমাদের আলোচনাকে পরিচালিত করবে, অথবা এমন একটি দেশ থেকে কি খুব বেশি আশা করা যায় যার নিজেরই সবচেয়ে প্রশ্নবিদ্ধ ‘ট্র্যাক রেকর্ড’ রয়েছে।” কম্বোজ বলেন, সন্ত্রাসবাদ শান্তির সংস্কৃতি এবং সমস্ত ধর্মের মূল শিক্ষার সরাসরি বিরোধী। যেটি সহানুভূতি, বোঝাপড়া এবং সহাবস্থানের পক্ষে থাকে।
তিনি আরও বলেন “এটি বিরোধের বীজ বপন করে শত্রুতা সৃষ্টি করে এবং বিশ্বব্যাপী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের অন্তর্গত শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির সার্বজনীন মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করে। সদস্য দেশগুলি যদি সত্যিই শান্তির সংস্কৃতির প্রচার করতে চায় এবং বিশ্বকে একটি ঐক্যবদ্ধ পরিবার হিসেবে দেখতে চায়, তাহলে তাদের একসঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করা প্রয়োজন। আমার দেশের এই ঐক্যের দৃঢ় বিশ্বাস আছে।” কাম্বোজ বলেন, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অসম উন্নয়নের কারণে বিশ্ব বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। ধর্ম বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা, বৈষম্য এবং সহিংসতাকে মোকাবিলা করতে হবে।
আরও পড়ুন: স্টোরেজ নিয়ে চিন্তা শেষ! এবার ধামাকাদার ফিচার্স নিয়ে হাজির WhatsApp
তাঁর মতে, “গির্জা, মঠ, গুরুদ্বার, মসজিদ এবং মন্দির সহ পবিত্র স্থানগুলিতে ক্রমবর্ধমান হামলার কারণে উদ্বিগ্ন বিশ্ব সম্প্রদায়কে এই ধরণের কাজের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।” কাম্বোজ ইউএনজিএ-র সভায় বলেছিলেন যে মহাত্মা গান্ধী কর্তৃক প্রস্তাবিত অহিংসার নীতি শান্তির প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতির ভিত্তি। তিনি বলেন, “ভারত শুধুমাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং শিখ ধর্মের জন্মস্থান নয়, ইসলাম, ইহুদি, খ্রিস্টান এবং জরথুস্ট্রিয়ান ধর্মেরও জন্মস্থান। এটি ঐতিহাসিকভাবে ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতিত মানুষদের জন্য আশ্রয়স্থল।”
আরও পড়ুন: কাঙাল পাকিস্তানের চাঁদে যাওয়ার শখ! চিনের কাঁধে চেপে পাড়ি পড়শি দেশের
কাম্বোজ জানান, “ভারতের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তার উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় এবং ভাষাগত বৈচিত্র্য সহনশীলতা এবং সহাবস্থানের প্রমাণ। দীপাবলি, ঈদ, ক্রিসমাস এবং নওরোজের মতো উৎসবগুলি ধর্মীয় সীমানা অতিক্রম করে এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভাগ করা আনন্দ উদযাপন করে।” উল্লেখ্য যে, ভারত “ফলোয়িং আপ দ্য প্রোগ্রাম অফ অ্যাকশন অ্যান্ড ডিক্লারেশন অন এ কালচার অফ পিস” রেজুলেশন পেশ করার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। যেটি দিল্লি “গর্বিতভাবে” কো-স্পন্সর করেছিল।