বাংলা হান্ট ডেস্ক : তাহলে কি অবশেষে চিনের (China) প্রতি পাকিস্তানের (Pakistan) মোহভঙ্গ হল? ভারতের (India) পড়শি দেশের সামনে সুুযোগ ছিল চিন অথবা আমেরিকার পক্ষ গ্রহণ করার। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে পাকিস্তান সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেল। চিনকে পাকি প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়, পাকিস্তান কোনও দিনই কোনও দলে যুক্ত হয়নি। বরং সবসময় নিরপেক্ষ থেকেছে। আর সর্বোপরি আমেরিকা পাকিস্তানের বহুদিনের পুরনো বন্ধু।
পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের বন্ধুত্ব আজকের নয়। এমন অনেক বারই হয়েছে, চিনের প্রভাবে এসে বহুবারই আমেরিকার সঙ্গে শত্রুতা বাড়িয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু এবারে ঘটল পুরো উলটো ঘটনা। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান ঘোষণা করল, তারা আমেরিকা বা চিন কারোর পক্ষেই যোগ দিতে রাজি নয়।
গতকাল পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে এক আধিকারিক মুমতাজ জোহরা বালোচ বলেন, ‘পাকিস্তান প্রথম থেকেই দলবাজির রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা যদি কোনও দলে যোগ দিই তাহলে সেটা পাকিস্তানের বিচার ধারার পরিপন্থী হবে।’
চিন এবং পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কটা বরাবরই বিপদের বন্ধুর মত, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে একে অপরকে সাহায্য ও সমর্থন করে আসছে দু’টি দেশ। তবে দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই বন্ধুত্বে এবার সম্ভবত ফাটল ধরতে যাচ্ছে।
পাকিস্তানে অবস্থিত চিনা দূতাবাসের মতে, পাকিস্তানে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হবার কারণে তারা পাকিস্তানে বসবাসরত চিনা নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয় এবং এরপর সেখানকার দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগ অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনার প্রায় এক মাস পর করাচি পুলিসের এমন আচরণ হতাশাজনক। এর আগে বেইজিংয়ের বেশ কয়েকটি অনুরোধ এবং সতর্কতা সত্ত্বেও পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ সেখানে বসবাসকারী চিনা নাগরিকদের সুরক্ষার ব্যাপারে উদাসীন মনোভাব দেখিয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানি নাগরিকদের ধারণা, চিন তাদের বাণিজ্যিক প্রকল্প, খনির কার্যক্রম এবং অন্যান্য আর্থিক বিনিয়োগের মাধ্যমে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করার আড়ালে ধীরে ধীরে তাদের জমি দখল করছে। পাকিস্তানি জনগণের এমন মনোভাব স্থানীয় সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলির জন্য নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেকেই বলছেন, পাকিস্তান চিনা স্বার্থ রক্ষার জন্য অন্য একটি সামরিক ইউনিটকে অর্থায়ন করতে পারে না।
পাকিস্তানে বসবাসকারী চিনা নাগরিকদের উপর স্থানীয়দের দ্বারা বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং তাদের সুরক্ষার জন্য কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এধরনের ঘটনা চীনা কোম্পানি এবং শি জিনপিং সরকারের মনে উদ্বেগের সৃষ্টি করছে। ফলে পাকিস্তানে চিনা বিনিয়োগ প্রভাবিত হচ্ছে এবং দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।