হবে না ভারত-পাক! আফ্রিদিদের মরিয়া লড়াইকে হার মানিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ফাইনালে তুললেন আশালঙ্কা

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ হারের পর শাহিদ আফ্রিদির চূড়ান্ত সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছিল শাহীন আফ্রিদিকে। পরোক্ষভাবে তার জামাইয়ের জন্যই ম্যাচ হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে এমনটাই যেন বলতে চেয়েছিলেন প্রাক্তন পাক অধিনায়ক। তবে বৃহস্পতিবার রাতের কার্যত সেমিফাইনালে পরিণত হওয়ার শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তান ম্যাচে নিজের জামাইয়ের শেষ ওভারটা দেখলে তিনি কি বলবেন তা এখনই ধারণা করা যাচ্ছে না। হয়তো কাছে ডেকে ক্ষমাই চেয়ে নেবেন।

শ্রীলঙ্কার হাতের মুঠোয় থাকা একটা ম্যাচ শেষ ৭ ওভারে ৫ উইকেট নিয়ে জমিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। আর তার পেছনে কৃতিত্ব অনেকটাই ছিল আফ্রিদির। ১২ বলে ১২ রান বাকি এমন অবস্থায় পেনাল্টিমেট ওভারে বল করতে আসা এবং ভারত ম্যাচে শ্রীলঙ্কার জার্সিতে প্রায় নায়কে পরিণত হওয়ার ২ ব্যাটার, ধনঞ্জয় ডি সিলভা এবং ওয়েলালাগাকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের ঝুলিতে ম্যাচটা এনে দিয়েছিলেন শাহীন।

যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিলেন নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ওডিআই ম্যাচ খেলতে নামা পাকিস্তানি মালিঙ্গা বলে পরিচিত জামান খান। আফ্রিদি ও তার দাপটে ১২ বলে জয়ের জন্য ১২ রান বাকি থাকা শ্রীলঙ্কার সামনে লক্ষ্য তখন ২ বলে ৬। ঠিক এই সময়টা ভাগ্য সঙ্গ দিলো আশালঙ্কাকে। জামালের বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভস এড়িয়ে তীব্র গতিতে গিয়ে পৌঁছল বাউন্ডারিতে। এরপর শেষ বলে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের পরিকল্পনা ঠিক কি ছিল তা স্পষ্ট হলো না। জামান বল ফেললেন লেগস্টাম্পের ওপর। লেগ সাইডের বিশাল অরক্ষিত অঞ্চলে বল ঠেলে দিয়ে দৌড়ে ২ রান নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে জয় ও ফাইনালে টিকিট এনে দিলেন গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা এই অলরাউন্ডার।

আরও পড়ুন: সুখবর ভারতীয় দলের জন্য! এশিয়া কাপ ফাইনাল ও বিশ্বকাপের জন্য ঘাতক তারকাকে দলে ফেরালো BCCI

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়া পাকিস্তানের শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ধীর গতিতে একটি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। এর মাঝে বৃষ্টি আবার বিভিন্ন ঘটায় ম্যাচে। টস করতে এমনিতেই দেরি হয়েছিল বলে ম্যাচটি হচ্ছিল ৪৫ ওভারের। মাঝে ফের বৃষ্টি আশায় ম্যাচটি হয়ে দাঁড়ায় ৪২ ওভারের। শ্রীলঙ্কার হয়ে পাথিরানা ৩ উইকেটে নিলেও খরুচে বোলিং করেছিলেন। মহম্মদ রিজওয়ানের ৭৩ বলে ৮৬ এবং ইফতিকার আহমেদের ৪০ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে ভর করে ২৫২ রান তোলে পাকিস্তান। এরপর ডিএল মেথডের কারণে শ্রীলঙ্কার টার্গেট ২৫৩ রানের বদলে দাঁড়ায় ২৫২।

আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের আগে খারাপ খবর পেলো BCCI! চোটের কারণে ৩ মাসের জন্য মাঠের বাইরে তারকা ওপেনার

রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। পেরেরা (১৭) ও পাথুম সিলভা (২৯) বড় ইনিংস না খেলতে পারলেও কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে ভর করে এগোচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন চলতে টুর্নামেন্ট ব্যাট হাতে ভালো ছন্দে থাকা সমরবিক্রমা (৪৮)। শ্রীলঙ্কার জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ৩০ থেকে ৩৮ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে চিত্রটা বদলে দেন ইফতিকার আহমেদ। ব্যাটের পর বল হাতেও জ্বলে ওঠেন তিনি। আফ্রিদিও তাকে নিজের শেষ স্পেলে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন। কিন্তু চারিথা আশালঙ্কার (৪৯*) নাছোড়বান্দা মনোভাবে ভর করে শেষপর্যন্ত নাটকীয় ম্যাচ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর জিতে নেয় দ্বীপরাষ্ট্রের। গতবছরের চ্যাম্পিয়নরা রবিবার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারতীয় দলের।

 

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর