বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমানে ইতিহাসের সব থেকে বড় আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পাকিস্তান (Pakistan)। অর্থনৈতিক সংকট যেন আষ্টেপৃষ্টে ধরে রেখেছে প্রতিবেশী দেশকে। যেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে মরিয়া পাকিস্তান। সর্বত্র সাহায্যর জন্য ছুটছে দেশ। চীন ছাড়া কয়েকটি দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও নিট ফল শূন্য। এই পরিস্থিতিতে দেশটির বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে বাঁচাতে এক অভিনব পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ আম্মার খান।
ঠিক কি বলেছেন তিনি? কিভাবে প্রতিবেশী এই দেশের দিকে মুখ ফেরাবে লক্ষী?
আম্মার খানের মতে, এই সংকটময় অবস্থা থেকে থেকে বেরিয়ে আসতে পাকিস্তানকে সর্বপ্রথম যা করা উচিৎ তা হল ৫০০০ টাকার নোট বাতিল করা। সম্প্রতি পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ আম্মার খান তাঁর ভাইরাল হওয়া এক পডকাস্টে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, এই মুহূর্তে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে কোনো পর্যালোচনা, তদন্ত ছাড়াই প্রায় এক ট্রিলিয়ন রুপি প্রচলন রয়েছে। যেই নগদ অর্থ শুধুমাত্র দেশের ব্যবহার বাড়াতে কাজ করছে, তবে তার থেকে কোনো ধরনের কর পাচ্ছে না দেশ।
সম্প্রতি বিজনেস টুডে-র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনীতিবিদ আম্মার খানের পরামর্শ অনুযায়ী, বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য, পাকিস্তানের উচিত অতি সত্তর দেশের সর্বোচ্চ প্রচলিত ৫০০০ টাকার নোটের ব্যবহার সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ করা। নিজে পডকাস্টে এই পরামর্শের স্বপক্ষে বেশ কিছু যুক্তিও দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ।
কি সেই যুক্তি? খানের মতে, এই পদক্ষেপ গ্রহণ করলে কর আদায়ের পরিমাণে বেশ খানিকটা বৃদ্ধি ঘটবে, স্বাভাবিকভাবেই যা দেশের অর্থনীতির হাল ধরার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। ৫০০০ টাকার নোট বাতিল! এই পরামর্শ থেকেই উল্লেখ করা যেতে পারে ২০১৬ সালে ভারতের কথা। ২০১৬, নভেম্বর! যা হয়েছিল তা সকলের জানা। ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়ে ভারতের মোদী সরকার ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট দেশের প্রচলন থেকে সরিয়ে নিয়েছিল। সেই থেকে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ৬ বছর, তবে এখনও মোদীর সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্কের শেষ নেই।
তবে ভারত নয়, এবার পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদের মুখে উঠে এল ঠিক একই রকম পরামর্শ। পাকিস্তানে বেশিরভাগ লেনদেন হয় নগদে। খানের মতে, বড় অংকের ৫০০০ এর নোটের কারণেই আর্থিক সংকটে জর্জরিত দেশে ক্রমাগত মূল্যস্ফীতি চারা দিয়ে উঠছে। পাশাপাশি দেশের ব্যাংক গুলো নগদ অর্থের সমস্যায় ধুঁকছে। আর ঋণ দিতে না পারার একটি বড় কারণ এই বড় অংকের নোট। খানের মতে, দেশে প্রচলন থাকা ৮ ট্রিলিয়ন রুপি যদি ৫ হাজার টাকার আকারে দেশের ব্যাংকে ফেরত দেওয়া হয়, তবে তা এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার পথ প্রশস্ত করবে।
যে কোনো দেশেই নোট বন্দির বিরোধিতা হবেই। যার উদাহরণ কিছু বছর আগেই ভারতে ঘটে যাওয়া ঘটনা। তবে আম্মার খান তাঁর পডকাস্টে যুক্তি দিয়ে এও উল্লেখ করেছেন যে, এই নোট সাধারণত শুধুমাত্র বড় লোকদের কাছে থাকে, তাই নোট বন্দির কারণে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়বেন না। পাশাপাশি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা যে হবেই সে বিষয়েও অবগত করেছেন তিনি। তবে এ তো কেবল পরামর্শ! এবার ভারতের অনুরূপ পথে পাকিস্তান হাঁটবে কিনা তা বলবে সময়।