বাংলাহান্ট ডেস্ক: পুরনো দিনের টলিউডের যে নায়করা বলিউডেও একই রকম সাফল্য পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় (biswajit chatterjee)। টলিউডের থেকেও বলিউডেই তাঁর ছবির পরিমাণ বেশি। ছেলে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও (prosenjit chatterjee) বাবার ধাঁচই পেয়েছেন। বলিউডে নাম করতে না পারলেও টলিডে তিনিই ‘ইন্ডাস্ট্রি’। মেয়ে পল্লবীও (pallabi chatterjee) পা রেখেছিলেন অভিনয়ে। কিন্তু তেমন জুত করতে পারেননি। তবুও তিনি বিশ্বজিতের মেয়ে, প্রসেনজিতের বোন।
বর্ষীয়ান অভিনেতার ৮৫ বছরের জন্মদিনে তাঁর লেখার মাধ্যমে স্মৃতিচারণ করলেন শৈশবের। ফুটে উঠল অভিমানও। আনন্দবাজার অনলাইনের হয়ে পল্লবী লেখেন, তাঁদের ছোটবেলায় বাবা বিশ্বজিতের জন্মদিনের কথা। সে এক এলাহি ব্যাপার। কলকাতা বা মুম্বই, যেখানেই থাকুন না কেন বিশ্বজিতের জন্মদিনে তারকা সমাবেশ হবেই।
কলকাতায় থাকলে বাড়িতে আসতেন উত্তম কুমার, তরুণ কুমার, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়রা। আল মুম্বইয়ে আসতেন রাজ কপূর, ধর্মেন্দ্র, ওয়াহিদা রহমানরা। এই একটা দিন প্রথম স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের হাতের রান্নাই খেতে চাইতেন বিশ্বজিৎ। মেনুতে থাকত অভিনেতার সমস্ত প্রিয় পদ আলু পোস্ত, বিউলির ডাল, ডিমের কষা, পাঁঠার মাংস। এদিন খাওয়ার প্রতি কোনো নিয়মের বাছবিচার করতেন না বিশ্বজিৎ।
ছোট থেকেই পল্লবী, প্রসেনজিৎরা বুঝে গিয়েছিলেন যে তাঁদের বাবা বড় তারকা। কিন্তু এখনকার তারকা সন্তানদের মতো বাবার সঙ্গে বেশি মেলামেশার সুযোগই পাননি তাঁরা। সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়া, শুটিং দেখাতে নিয়ে যাওয়া তো দূর, কাজের ব্যস্ততায় বাবাকে সারাদিনে দেখতেই পেতেন না দুই ভাই বোন।
এরপরেই পল্লবীর লেখায় অভিমানের ছোঁয়া। মুম্বইয়ে থাকাকালীন ইরা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান বিশ্বজিৎ। দ্বিতীয় বিয়ে করেন, জন্ম হয় মেয়ে সম্ভাবীর। বাবার থেকে দূরত্ব আরো বেড়ে যায় প্রথম পক্ষের দুই ছেলে মেয়ের। পল্লবী জানান, বিশ্বজিতের দ্বিতীয় সংসার হওয়ার পর আর বাবার জন্মদিনটাও পালন করতে পারতেন না তাঁরা।
শেষমেষ বাবার জন্য হাতে এঁকে গ্রিটিংস কার্ড পাঠাতে শুরু করেন দুই ভাই বোন। কিন্তু সেসব আদৌ বাবার হাতে পৌঁছেছিল কিনা তা এখনো জানতে পারেননি পল্লবী। আসলে ঠিকানা জানতেন না যে বাবার! কিন্তু তবুও সাহস করে জিজ্ঞাসা করে উঠতে পারেননি। তবে অভিনেত্রী জানান, বিশ্বজিতের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী মেয়ের প্রতি তাঁর রাগ, হিংসা কোনোটাই নেই। আবার বাবার মতো এমন সুপুরুষ আর দ্বিতীয় কাউকে পানওনি। তাই আজও অবিবাহিতই রয়ে গিয়েছেন পল্লবী।