বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জোর ধাক্কা রাজ্যের! পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Vote 2023) কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) যে রায় দিয়েছিল, সেই নির্দেশেই শীলমোহর দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছিল, তা এদিন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। চরম অস্বস্তিতে রাজ্য।
মঙ্গলবার পঞ্চায়েত মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের একাধিক প্রশ্নের মুখে পরে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শুনানি ছিল বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি নাগরত্ন কমিশনকে প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে চিন্তিত কেন? আপনারা আপনাদের কাজ করুন। যেখান থেকেই বাহিনী আসুক, আপনাদের অসুবিধা কোথায়?’’
পাল্টা কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আমরাও চাই উপযুক্ত নিরাপত্তা থাক। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ার জন্য হাই কোর্ট আমাদের উপর নির্দেশ। তবে এটা আমাদের কাজ নয়।” এরপর বিচারপতি নাগরত্ন বলেন, ‘‘পূর্বেও রাজ্যে হিংসার ঘটনার উদাহরণ রয়েছে। হাই কোর্ট পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েছে। সেখানে অসুবিধার কিছু দেখছি না।’’ ভোটে কোনও রকম অশান্তি কাম্য নয় বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি।
এদিন আদালতে সওয়াল জবাব পর্ব চলাকালীন কমিশন জানায়, রাজ্যে মোট ৬১৬৩৬ টি বুথ রয়েছে। তার মধ্যে ১৮৯টি স্পর্শকাতর, এর জন্য যে অতিরিক্ত বাহিনীর প্রয়োজন আছে তার জন্য ইতিমধ্যেই অনান্য ৫ রাজ্যের কাছে আবেদন করেছে রাজ্য। এরপরই বিচারপতি নাগরত্ন কমিশনকে বলেন, এর মানে আপনারাও স্বীকার করে নিচ্ছেন যে রাজ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশ বাহিনী নেই।
৫ রাজ্যের বদলে একজায়গা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসলে আপত্তি কোথায় সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে প্রশ্ন চলাকালীনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী হরিশ সালভে বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে থেকেই হিংসার ঘটনা শুরু হয়েছে। ভোটের সময় সেই অশান্তি হিংসার মাত্রা যে আরও বাড়তে পারে সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
পাশাপাশি আদালতে সওয়াল করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর আইনজীবী বিবেক টাঙ্কাও। টানা দু’ঘণ্টা ধরে শুনানি চলার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছিল তা খারিজ করে দেন বিচারপতি নাগরত্ন। ফলে শেষমেষ গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রইল।