‘সব দেখেও অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মতো বসে আছেন’, মমতাকে জোর আক্রমণ TMC বিধায়ক হুমায়ুনের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের চর্চার শিরোনামে হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। মুর্শিদাবাদ তথা রাজ্য-রাজনীতিতে তার মতো পাল্টি খাওয়া নেতার সংখ্যা সত্যিই কম। অন্যদিকে নেতার হরেক রকম মন্তব্য তো আছেই। এই যেমন সম্প্রতি খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ‘অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র’ বলে তোপ দাগেন হুমায়ুন। আর তারপর থেকে দলের অধিকাংশের কাছেই চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন তিনি।

তাহলে কী এবার হুমায়ুনকে বহিষ্কার করবে তৃণমূল? কারণ মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে নেতার ওই মন্তব্যের পর তৃণমূলের এক রাজ্য নেতা বলেন, অভিষেকের উচিত ওকে এখনই তাড়িয়ে দেওয়া। তবে অনেকের মতে, ফের রাজনৈতিক রং বদলাচ্ছেন হুমায়ুন কবীর। হয়তো অধীর চৌধুরীর শরণাপন্ন হবেন নেতা। অনেকে তো এটাই ভেবে নিয়েছেন।

কারণ কী? সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে নেতার সঙ্গে তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাওনি সিংহ রায়ের সংঘাত সামনে আসে। আগে থেকেই পঞ্চায়েতের প্রার্থী নিয়ে হুমায়ুনের মনে ক্ষোভ ছিল। এরপরই গতকাল মনোনয়ন পর্ব প্রত্যাহারের শেষ দিনে সেই প্রার্থী শাওনি সিংহ রায়কে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন নেতা। এমনকি চাঁচাছোলা ভাষায় মুখ্যমন্ত্রীকেও আক্রমণ করেন।

দলকে রীতিমতো ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই সময়ের মধ্যে শাওনিকে সরিয়ে জেলা সভাপতি পদে নিয়ামত হাজিকে আনতে হবে। পাশাপাশি চেয়ারম্যান পদ থেকে অপূর্ব সরকার ওরফে ডেভিডকে সরিয়ে অশোক দাসকে সেই জায়গায় আনার কথায় বলেন হুমায়ুন।

তার সাফ হুঁশিয়ারি , ‘আমার যা লোক আছে সেই লোক এনে তৃণমূলের পার্টি অফিস ঘেরাও করব। তারপর ওকে (শাওনিকে) টেনে বের করব। দেখব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশের গুলির জোর বেশি না আমাদের হিম্মতের।’

এখানেই শেষ নয়, এরপর সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে হারার পর যখন তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন তখন আমরা বিধায়করাই সই করে ওকে পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করেছিলাম। আমারও সই আছে। শাওনি সিংহ রায়ের নেই।’ হুমায়ুন আরও বলেন, ‘সব দেখেশুনে দলনেত্রী অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মতো চুপ করে বসে আছেন।’

tmc

খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে এহেন মন্তব্য করায় তার ওপর রেগে বোম দলের অধিকাংশ। এরপরই তাকে তৃণমূল থেকে বের করে দেওয়ারও দাবি শোনা যায় দলের অন্দরমহল থেকে। যদিও হুমায়ুনের সাফ কথা, ‘দল তাড়াল না সাসপেন্ড করল, তাতে কুছ পরোয়া নেই! অন্যায় কখনও মানিনি, এখনও মানব না।’

আর এরই মধ্যে এবার দলের নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনে মিছিল করলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। যে কোনও মূল্য নির্দলদের জিতিয়ে আনার চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিলেন বিধায়ক। তাহলে কী জল্পনাই সত্যি হচ্ছে! ফের দল বদলাচ্ছেন হুমায়ুন, এই নিয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট মন্তব্য তার মুখে শোনা যায়নি।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর