বাংলাহান্ট ডেস্ক : এসএসসি রায়ে রাতারাতি বাতিল হয়ে গিয়েছে ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকার (Teachers) চাকরি। অনেকে ক্লাসে পড়াতে পড়াতেই পেয়েছেন চাকরি চলে যাওয়ার খবর। তারপর থেকেই শিক্ষকদের অভাবে ধুঁকতে শুরু করেছে রাজ্যের বহু স্কুল। শহর থেকে জেলা, উত্তর থেকে দক্ষিণ, দৃশ্যটা কমবেশি একই রকম। কিছু স্কুলে চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকদের জায়গায় পার্শ্ব শিক্ষকদের (Teachers) দিয়ে ক্লাস করানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু এবার ক্লাস বয়কটের পথে গেলেন তাঁরাও। ফলত মাথায় হাত দিয়ে বসার জোগাড় হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের।
স্কুলে আসছেন না পার্শ্ব শিক্ষকরা (Teachers)
এমনই ঘটনা ঘটছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির বহু স্কুলে। চাকরি বাতিলের কারণে স্কুলে আসতে পারছেন না একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকা। তাদের পরিবর্তে আনা হয়েছিল পার্শ্ব শিক্ষকদের (Teachers)। কিন্তু তারাও কার্যত বয়কট করতে শুরু করেছেন ক্লাস। একটি স্কুলে পরপর তিন দিন অনুপস্থিত থেকেছেন পার্শ্ব শিক্ষকরা। একদিন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে কেটে গেলেও পরের দুদিন একাধিক ক্লাস হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে স্কুল চালানোটাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্তৃপক্ষের।
বিকল্প হতে নারাজ পার্শ্ব শিক্ষকরা: পার্শ্ব শিক্ষকদের (Teachers) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্তই ক্লাস করানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু অনেক স্কুলে শিক্ষকের অভাবে উঁচু ক্লাসেও পড়াতে পাঠানো হয় তাদের। এমনকি ক্লাস টিচার হিসেবেও পার্শ্ব শিক্ষকরা রয়েছেন বহু স্কুলে। এসএসসিতে চাকরি বাতিল হওয়ার পর অনেক স্কুলেই পূর্ণ শিক্ষকদের পরিবর্তে পার্শ্ব শিক্ষকদের ক্লাস করানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ‘বিকল্প’ হিসেবে ক্লাস করাতে নারাজ পার্শ্ব শিক্ষকদের (Teachers) একটা বড় অংশ। পার্শ্ব শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন ডাক দিয়েছেন স্কুল বয়কটের। কিন্তু কী দাবি তাঁদের?
আরো পড়ুন : অশান্তি অব্যাহত মুর্শিদাবাদে, পরিস্থিতি ‘ঠাণ্ডা’ করতে এবার বড় পদক্ষেপ রাজ্যের
কী দাবি পার্শ্ব শিক্ষকদের: পার্শ্ব শিক্ষকদের স্পষ্ট বক্তব্য, অতিরিক্ত চাপ তাঁদের দেওয়া যাবে না। তাঁরা দাবি করেছেন, অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপানো যাবে না। সঙ্গে ন্যায্য বেতন দিতে হবে। হাইস্কুলের একজন পার্শ্ব শিক্ষকের (Teachers) সর্বোচ্চ বেতন প্রায় ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু এই টাকায় আর চালানো সম্ভব নয় বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। এদিকে বেতন বাড়ানোর কথা থাকলেও তা হয়নি। বাড়তি ক্লাস নিতে হচ্ছে। আবার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
আরো পড়ুন : হটস্পট মুর্শিদাবাদ! এবার গুলিবিদ্ধ সামসের নাদার, BSF-র বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের
শিলিগুড়ির বেশ কিছু স্কুলে পার্শ্ব শিক্ষকরা ফিরে এসেছেন। তাঁদের বক্তব্য, শিক্ষক না থাকলে সেই ফাঁকা ক্লাস তাঁদের নিতে হচ্ছে। কেউ কেউ আবার বলছেন, তাঁরা পড়ুয়াদের কথা ভাবনা চিন্তা করেই ফিরেছেন। যদি ক্লাস বন্ধ হয় তাহলে সমস্যা আরো বাড়বে বই কমবে না। তৃণমূল পার্শ্ব শিক্ষকদের সংগঠনের দার্জিলিং জেলা সভাপতি বলেন, অন্যান্য শিক্ষকদের মতোই সমান তালে ক্লাস করাতে হচ্ছে তাঁদের। তাই বেতন বৃদ্ধি পাওয়ায জরুরি। দাবি পূরণ না হলে ফের ক্লাস বয়কটের দিকে যেতে পারেন তারা। সেক্ষেত্রে স্কুলের পড়াশোনা কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ।