বাংলা হান্ট ডেস্ক: দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত ২৫ এপ্রিল রাতে ৪,৪০০ কোটি ডলার (অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭০২ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা)-এর বিনিময়ে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার কিনে নেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনকুবের ইলন মাস্ক। টুইটারের একক মালিকানা পাওয়ার পর থেকেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন যে, এবার টুইটারের কার্যপ্রণালীতে বদল আনতে পারেন মাস্ক। এমনকি, ইলন নিজেও টুইটারকে আরও উন্নত উপায়ে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন।
যদিও, মালিকানা বদল হওয়ার পরই আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে এবার এই সংস্থায় ছাঁটাইপর্ব শুরু হবে। শুধু তাই নয়, সংস্থার সিইও পরাগ আগরওয়ালকেও চাকরি হারাতে হতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে, সাময়িকভাবে টুইটারের সিইও পদের দায়িত্ব সামলাতে পারেন ইলন মাস্ক।
এমতাবস্থায়, টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল প্রথমে চাকরি নিয়ে আশ্বস্ত করলেও কয়েক দিন যেতে না যেতেই ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেল সংস্থার অন্দরে। ইতিমধ্যেই, এই সংস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি এবার জানা গিয়েছে যে, টুইটারের প্রোডাক্ট হেড ব্রুস ফ্লাক এবং জেনারেল ম্যানেজার ক্যাভন বেকপোর চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
এদিকে, অন্য এক সূত্র থেকে কার্যত চাঞ্চল্যকর এক দাবি করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে যে ইস্তফা নয়, বরং তাঁদের ছাটাই করে দিয়েছেন স্বয়ং টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল। পাশাপাশি, খবর পাওয়া গিয়েছে যে, মাস্কের হাতে টুইটারের ক্ষমতা তুলে দেওয়ার আগে ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে টুইটারের অন্দরে। আর সেখানেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরই প্রথমে ছাঁটাই করা হচ্ছে।
এছাড়াও, এই সংস্থার তরফে জানানো হয় যে, চলতি সপ্তাহ থেকেই সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত করে দেওয়া হচ্ছে। যদিও ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় পদগুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে। এমতাবস্থায়, গত বৃহস্পতিবারই সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই দুই শীর্ষ কর্তা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে ব্রুস ফ্লাকের পক্ষ থেকে কিছু জানতে না পারা গেলেও চাকরি হারানোর প্রসঙ্গে ক্যাভন বেকপো কার্যত টুইটের মাধ্যমে গর্জে উঠেছেন। জানা গিয়েছে যে তিনি আপাতত পেটারনিটি লিভ বা পিতৃত্বকালীন অবকাশে রয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি জানিয়েছেন, “আমি কখনও কল্পনাও করিনি যে এইভাবে টুইটার ছেড়ে দেব। এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই আমার নয়।” এছাড়াও, তিনি আরও জানান, “টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল আমাকে জানান, টুইটারের কর্মীদের তিনি অন্য অভিমুখে নিয়ে যেতে চান, যা আমার সঙ্গে খাপ খাচ্ছেনা। আর ওই কারণেই তিনি আমায় চাকরি ছাড়তে বলেন।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শেয়ারহোল্ডার এবং রেগুলেটেরদের সাথে আলোচনা শেষ না হওয়ায় টুইটারের মালিকানা হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি এখনও পুরোপুরিভাবে শেষ হয়নি। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে যে, এই প্রক্রিয়া শেষ হতে চলতি বছরের শেষ অবধি সময় লাগতে পারে।