ভেঙে গিয়েছে সূর্যের একাংশ, মহাবিপর্যয় মহাকাশে! আর কতদিন আয়ু পৃথিবীর?

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। যেটি ইতিমধ্যেই গভীর চিন্তায় ফেলেছে বিজ্ঞানীদের (Scientists)। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, এবার সূর্যের (Sun) ভূপৃষ্ঠ থেকে একটি বিরাট অংশ রীতিমতো বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, সূর্যে কার্যত ভাঙন ধরেছে। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণাকারী সংস্থা “NASA”-র জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মারফত গত সপ্তাহে এই মহাজাগতিক দৃশ্যটি সামনে এসেছে।

এর ফলে সূর্যের উত্তর মেরুর চারপাশে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের মতো পরিস্থিতি। আর এই ঘটনায় আশঙ্কায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরাও। পাশাপাশি, কেন এমন ঘটনা ঘটল সেই সম্পর্কে অনুসন্ধানও চালাচ্ছেন তাঁরা। সম্প্রতি এই ঘটনার প্রসঙ্গে ট্যুইট করেছেন স্পেস ওয়েদার ফোরকাস্টার ট্যামিথা স্কোভ। তিনি মহাকাশের আবহাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনার পূর্বাভাস দিয়ে থাকেন। আর সেই কাজ করার সময়েই তিনি এই অবাক করা ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত হন।

 কি প্রভাব পড়বে পৃথিবীর ওপর: এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে, এহেন ঘটনার ফলে পৃথিবীর উপরে ঠিক কি প্রভাব পড়তে পারে? এমনকি, পৃথিবীর আয়ুর প্রসঙ্গেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই মহাজাগতিক ঘটনা অবাক করে দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের। এই প্রসঙ্গে আমেরিকার কলোরাডোর বৌল্ডারের “ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমস্ফেরিক রিসার্চ”-এর সৌরপদার্থবিদ স্কট ম্যাকইনটশ জানিয়েছেন যে, এই ধরণের বিরল দৃশ্য তিনিও কখনও প্রত্যক্ষ করেন নি।

যদিও, স্পেস ওয়েদার ফোরকাস্টার ট্যামিথা স্কোভ অবশ্য জানিয়েছেন এই বিষয়টি হল “পোলার ভর্টেক্স”! এমন পরিস্থিতিতে সূর্যের ঠিক উত্তর মেরুর অংশে প্রধান ফিলামেন্ট থেকে একটা বড় অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। যার ফলে ওই ঘূর্ণায়মান জায়গায় একটি ঘূর্ণিঝড়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

কি এই “পোলার ভর্টেক্স”: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ঘড়ির উল্টো দিকে ঠান্ডা হাওয়া ঘুরলে ঠিক যেরকম অবস্থার সৃষ্টি হয়, সেটিকেই বলা হয় “পোলার ভর্টেক্স”। এদিকে, সূর্যের বহির্পৃষ্ঠ ঘিরে ঘূর্ণিঝড়ের অস্তিত্ব রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, মহাজাগতিক এই ঘটনাকে সোলার পোলার ভর্টেক্স রূপে অভিহিত করেছেন স্পেস ওয়েদার ফোরকাস্টার ট্যামিথা স্কোভ। পাশাপাশি, আরও জানা গিয়েছে যে, ঝড়ের মতো ওই অংশটি সূর্যের উত্তর মেরুর প্রায় ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ প্রদক্ষিণ করতে সময় নিয়েছে ৮ ঘণ্টা মত। অর্থাৎ, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এই ঘটনাটি ঘটেছে।

এমন পরিস্থিতিতে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর দুই মেরুস্থানেই বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে নিম্নচাপ বজায় রয়েছে। সেখানেই এই পোলার ভর্টেক্স পরিলক্ষিত হয়। শুধু তাই নয়, গ্রীষ্মে এই অবস্থাটি দুর্বল হয়ে পড়লেও শীতে এটি ক্রমশ শক্তিলাভ করে। তবে, সামগ্রিকভাবে এই ঘটনা অত্যন্ত বিরল হওয়ায় এটি রীতিমতো স্তম্ভিত করে দিয়েছে বৈজ্ঞানিক মহলকেও।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর