বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ২ বছরে এই নিয়ে সাত বার! ‘ঢুকিয়ে দেব’ মন্তব্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে ফের স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব জমা পড়ল বিধানসভায় (Assembly)। শুক্রবার সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে (Partha Bhowmik) ‘এক মাসের মধ্যে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনার জেরেই বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ।
শুক্রবাররের ঘটনার পর বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শুভেন্দুর মন্তব্য অত্যন্ত কুরুচিকর। তার প্রেক্ষিতে সেচমন্ত্রী চাইলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনতে পারেন। সূত্রের খবর, এরপরই শনিবার স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ জমা দিয়েছেন পার্থ। মন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিধানসভার সদস্য হলেও আগে কখনও এই রকম হুমকির ঘটনার মুখে পড়তে হয়নি তাকে।
কী হয়েছিল? শুক্রবার বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়কদের উদ্দেশে তির্যক মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা। এরপর সেই মন্তব্যের জবাব দিতে পাল্টা শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে বিদ্রুপের সুরে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘শিশিরবাবু কোন দলে?’ এরপরেই বেজায় চটে যান নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
বিধানসভা অধিবেশনে দাঁড়িয়েই নৈহাটির বিধায়ক পার্থর উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘আপনার নামে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা আছে। এক মাসের মধ্যে আপনাকে দেখে নেব! একমাসের মধ্যে ঢুকিয়ে দেব।’ প্রকাশ্যে বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য ঘিরেই শোরগোল বেঁধে যায় বিধানসভায়।
শুভেন্দুর মন্তব্যের পর মন্ত্রী জানান, তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন এবং এ নিয়ে প্রিভিলেজ আনবেন। এই সম্পর্কে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রিভিলেজ কমিটি তদন্ত করে আগামী অধিবেশনে রিপোর্ট জমা দেবে। প্রসঙ্গত, বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এর আগের প্রিভিলেজটিও পার্থ ভৌমিক এনেছিলেন।
শুক্রবার মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, “সম্মানীয় বিরোধী দলনেতা বিধানসভায় প্রকাশ্যে আমাকে বলেন আমাকে এক মাসের মধ্যে জেলে ঢুকিয়ে দেবেন। অথচ আমি জানি না আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আছে, যাতে এক মাসের মধ্যে জেলে ঢোকানো যায়। স্বাভাবিকভাবেই আমি মনে করেছি এটা আমার নিরাপত্তা অভাবের একটা কারণ হতে পারে। ” যদিও বিজেপি বিধায়কদের দাবি, শুভেন্দু ‘জেল’ শব্দটির উল্লেখ করেননি।
উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত ১৭তম বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মোট সাতটি স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রথমটি এনেছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। দ্বিতীয়টি বিশ্বজিৎ দাস, তৃতীয়টি কৃষ্ণ কল্যাণী, চতুর্থটি এনেছিলেন সৌমেন রায়। পঞ্চমটি এনেছিলেন তন্ময় ঘোষ। ষষ্ঠটি এবং সপ্তম, এই দুটোই আনলেন পার্থ ভৌমিক।