‘ও আমার ছাত্র নয়”, পার্থর PhD বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ( Partha Chatterjee) পিএইচডি ডিগ্রি (Phd.) নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল অনেক আগেই। সেই বিতর্কে নাম জড়িয়েছে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Raigunj Unversity) বর্তমান উপাচার্য সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়ের। এসএসসি (SSC Scam) নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ইডি (ED) হাতে গ্রেফতারের পর থেকেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েও নানা মহলে নানাপ্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

ক্লাস না করেও ‘ডক্টরেট’ : বিরোধীদের অভিযোগ, মন্ত্রীত্বের প্রভাব খাটিয়ে মাত্র এক বছরেই একটিও ক্লাস না করেও ‘ডক্টরেট’ হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যয়া। সে সময় পার্থকে গাইড হিসেবে সাহায্য করেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনিল ভুঁইমালি। সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায় ছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান। বিরোধীদের অভিযোগ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পিএইচডি-তে সুবিধা দিতে সাহায্য করেছেন তাঁরা দুজনেই। এই সাহায্যের পুরষ্কারও মেলে হাতেনাতেই। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন ডঃ অনিল ভুঁইমালি এবং বালুরঘাট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ পান সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়।

যদিও এই সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দেন উপাচার্য সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, ২০১৩ সালে তিনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থশাস্ত্র বিভাগের প্রধান ছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়ম মেনেই গবেষণাপত্র পেশ করেছেন এবং পরীক্ষাও দিয়েছেন। তবে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় একা ঘরে পরীক্ষা দেননি। অন্যান্যরাও ছিলেন। তৎকালীন উপাচার্য, অন্যান্য আধিকারিকরা এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন বলে জানান সঞ্চারী।

ওঁ আমার ছাত্রও নয় : বালুরঘাট বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হওয়া নিয়ে সঞ্চারী প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি কবে চ্যান্সেলর হয়েছি? ২০২১ সালে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাকে নিয়োগ করা হয়। আমি এক সঙ্গে দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলাম। দক্ষিণ দিনাজপুর ও আলিপুরদুয়ার। তারপরই আমি সিলেক্টেড হই। গভর্নর নিজে ট্যুইট করেছিলেন এই বিষয়ে। আমি একমাত্র ভাইস চ্যান্সেলর, যাকে ফুল টার্ম চার বছর দেওয়া হয়েছে। আমি তো হেড অফ ডিপার্টমেন্ট ছিলাম। সেটা পরিচালনা করেছি। আমি ওঁর গাইডও ছিলাম না। ওঁ আমার ছাত্রও নয়। আমাকে এ সব বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না। আমি এর সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নই।’ উল্লেখ্য, পরবর্তীতে অনিল ভুঁইমালি রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরে যেতে সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়কে নব গঠিত বালুরঘাট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যেরও দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়।

বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষে বলেন, ‘এই ডিগ্রি জোর করে প্রভাব খাটিয়ে পেয়েছেন পার্থ। মানা হয়নি ইউজিসির নিয়মও। মন্ত্রী হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে ডিগ্রি নিয়ে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ পুরস্কার হিসাবে দেন দুই অধ্যাপককেই।’ অন্যদিকে সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘সবটাই বেনিয়ম হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী হয়েও শিক্ষার ন্যূনতম নিয়ম না মেনেই ডিগ্রি নেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সবাই সবটাই জানেন। এই বেনিয়মেরও তদন্ত হওয়া দরকার।’

Sudipto

সম্পর্কিত খবর