বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাস্তি ভোগ করছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার জেলের বাইরে বেরিয়ে এসেছেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাছাড়া সোমবার জামিন পেয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
জামিন পেতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)
ইতিমধ্যেই এই দুর্নীতি মামলায় জড়িতরা একের পর এক জামিন পেতে শুরু করেছেন। তাই এবার জামিন পেতে একেবারে মরিয়া হয়ে উঠেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও (Partha Chatterjee)। প্রসঙ্গত ইতিপূর্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে কম বিতর্ক হয়নি। যদিও এদিন তাঁর আইনজীবী মুকুল রোহতাগীর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন অর্পিতাকে নিয়ে কোনও চিন্তাই নেই। তিনি বলেন, ‘আই হ্যাভ নো কনসার্ন ফর হার।’
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তত্ত্বাবধানে থাকা প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পাওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। আজ বুধবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) জামিন সংক্রান্ত এই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। জানা যাচ্ছে তাঁর জামিনের শুনানি আপাতত স্থগিত হয়ে গিয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে সোমবার। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কতদিন ইডি এবং সিবিআই হেফাজতে ছিলেন ইডি এবং সিবিআই-এর কাছে সেই সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছেন বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়া।
এদিন আদালতের শুনানি পর্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন নামঞ্জুর করার আর্জি জানিয়ে ইডি-র পক্ষে আইনজীবী অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু বলেন, ‘পার্থ জামিন পেলে তথ্য-প্রমাণ লোপাট এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন। অর্পিতা নিজের স্টেটমেন্টে জানিয়েছেন, তিনি পার্থকে নিয়ে ভীত।’
আরও পড়ুন: সাংসদদের নিয়ে আলাদা বৈঠক অভিষেকের! ইন্ডিয়া জোটকে এড়িয়ে যাচ্ছে তৃণমূল?
এদিন এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী রোহতগি বলেন, ‘আমার ওঁকে নিয়ে কোনও চিন্তা নেই’। অন্যদিকে একইসঙ্গে ‘বান্ধবী’ অর্পিতার জামিনকে হাতিয়ার করেই পার্থর জামিন নিশ্চিত করতে আদালতে রোহতগী প্রশ্ন তুলেছেন,অর্পিতার বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে কোনও টাকা উদ্ধার হয়নি। তাই অর্পিতা ট্রায়াল কোর্ট থেকে জামিন পেলে উনি কেন পাবেন না?
প্রসঙ্গত ২০২২ সালে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। এপ্রসঙ্গে আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে নিজের মক্কেলের হয়ে মুকুল রোহতগী এদিন বলেছেন, ২৮ মাস অর্থাৎ প্রায় আড়াই বছর জেলে আছেন পার্থ। আইন অনুযায়ী, যদি কেউ প্রথমবারের অভিযুক্ত হয় তাহলে মোট শাস্তির এক-তৃতীয়াংশ সময়ে কেউ জেলে থাকলে তাকে জামিন দিতে হবে। সেইসাথে বলা হয়েছে পার্থর এখন ৭৩ বছর বয়স, তাছাড়া তিনি নাকি অসুস্থ।
এরপর পাল্টা জবাবে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু বলেন, ‘প্রায় ৫০০০০ যোগ্য ছাত্র-ছাত্রীর জীবন এই বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন। গ্রেফতারের পর ডাক্তারের উপর প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা অসুস্থতার বাহানা করেছিলেন। বৃহত্তর স্বার্থে তার জামিন হওয়া উচিত নয়।’ তবে এদিন শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, এই মামলার তদন্ত শেষ করা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। ফলে অনির্দিষ্টকাল কাউকে জেলে রাখা যায় না।