বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি (SSC) দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। একের পর এক নতুন তথ্য সামনে এসে চলেছে এবং তাকে ঘিরে একাধিক মন্তব্য সামনে আসায় ক্রমশ চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। একদিকে যখন তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে সিপিএম (Cpim), বিজেপি (BJP) এবং কংগ্রেসের (Congress) মতো দলগুলি, আবার পাল্টাও দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এদিন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) দাবি করেন, “কেন্দ্রের উচিত বিজয় মাল্য এবং নীরব মোদীর মত লোকেদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা।” আবার অপরদিকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) দাবি, “এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালকে রিসর্টে পরিণত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।” ইতিমধ্যে এসকল বক্তব্য এবং পাল্টা বক্তব্যকে ঘিরে বিস্তর বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে পার্থ ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ২১ কোটি নগদ অর্থ, কুড়িটি মোবাইল ফোন, একাধিক সোনা গয়না এবং বিদেশি মুদ্রা পাওয়ার অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হেফাজতের মাঝেই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন এসকল প্রসঙ্গকে উল্লেখ করে কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বিজেপি যেভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করে চলেছে, তাতে তাদের মান্যতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। রাজ্যের যে বিষয়গুলি রয়েছে, তা আমাদের এজেন্সি দিয়ে তদন্ত করা যেতে পারে। বরং কেন্দ্র সরকারের উচিত, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে বড়সড় দুর্নীতির তদন্তে ব্যবহার করা। যেভাবে নীরব মোদী থেকে শুরু করে বিজয় মাল্যরা কোটি কোটি টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত।”
আবার অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এসএসকেএম হাসপাতালকে রিসর্টে পরিণত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যখনই সিবিআই কিংবা ইডি তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করে, তখনই তারা এসএসকেএম-র উডবার্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ভর্তি হয়। আমরা এর বিরুদ্ধাচারণ করছি।”
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এসএসকেএম হাসপাতালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে রাখার মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে সকল সাক্ষীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইডির উচিত তৎপরতার সঙ্গে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।” যদিও সিপিএম এবং বিজেপির কটাক্ষ মাঝে পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় প্রসঙ্গে এদিন কুণাল ঘোষ জানান, “অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে যে পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে, তার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনরকম সম্পর্ক নেই। উনি আমাদের দলের সঙ্গে জড়িত নন।” তবে শাসক দল এবং বিরোধীদের বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্য মাঝে রাজ্যের পরিস্থিতি শেষপর্যন্ত কোথায় গিয়ে পৌঁছায়, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।