বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমানে বঙ্গ রাজনীতিতে একের পর এক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি সামনে এসে চলেছে আর এর মাঝেই বড় প্রশ্ন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) মধ্যে পারস্পরিক রসায়ন ঠিক কতটা জমকালো ছিল? বর্তমানে সেই বিতর্ক উস্কে দিয়ে ইডির (Enforcement Directorate) দাবি, প্রথম দিকে সম্পর্ক ভালো থাকলেও পরবর্তীতে নিয়োগ দুর্নীতিতে টাকা নিয়ে দুজনের মাঝে তৈরি হয় দূরত্বের! মনোমালিন্যের কারণও প্রকাশ্যে তুলে ধরেছে তদন্তকারী সংস্থা।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময় এসএসসি থেকে শুরু করে প্রাথমিক টেট এবং অন্যান্য একাধিক নিয়োগ দুর্নীতিতে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। এই সকল মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অশোক সাহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্যরা হেফাজতে। এর মাঝেই গত মঙ্গলবার এই তালিকায় যোগ দেন মানিক ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক তথ্য সামনে এসে চলেছে আর এবার উঠে এলো পার্থ-মানিক সম্পর্কের তত্ত্ব।
ইডির দাবি, মানিক ভট্টাচার্য এবং পার্থের মধ্যে পারস্পরিক রসায়ন ভালো থাকলেও পরবর্তীতে টাকার কারণে দুজনের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এমনকি এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পার্থ চট্টোপাধ্যায় একদা মানিককে ডেকে রীতিমতো ধমক পর্যন্ত দিয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
ইডি সূত্রে খবর, গত ২৮শে জুলাই পার্থ এবং মানিককে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সময় টাকার বিষয়টি তাঁরা এড়িয়ে গেলেও পরবর্তীতে সেই কথা স্বীকার করেন দুজনেই। এছাড়াও তাদের মোবাইল এবং অন্যান্য একাধিক সূত্র ঘেঁটে এই প্রসঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারী সংস্থার। এমনকি পার্থের মোবাইলে একটি মেসেজ চোখে পড়ে, যেখানে লেখা ছিল, “মানিক যা তা ভাবে টাকা তুলছে।” সেই মেসেজটি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে ফরোয়ার্ড পর্যন্ত করেন পার্থ।
সূত্রের খবর, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় পার্থ এবং মানিক ভট্টাচার্যের ওপর মূলত অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এক্ষেত্রে তাদের দাবি অনুযায়ী, দুর্নীতি মামলায় যুক্ত ছিলেন পার্থ-মালিক দুজনেই। প্রথম দিকে তাদের সম্পর্ক ভালো থাকলেও পরবর্তীতে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর নজর এড়িয়ে টাকা তোলেন মানিকবাবু এবং এই খবর সামনে আসতেই ক্ষুব্ধ হন পার্থ। পরবর্তীতে মানিককে ধমক দেওয়ার পাশাপাশি পার্থ প্রশ্ন করেন, “এত চাকরি হচ্ছে। কিন্তু টাকা কোথায়?”
ইডির অনুমান, এরপর থেকেই পার্থ এবং মানিকের মধ্যে সম্পর্কে ক্রমাগত ভাঙন ধরে। একই সঙ্গে মানিকের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে হাজার হাজার চাকরি প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে। এ মামলায় তাঁকে জেরা করার পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক সূত্র ধরে তদন্ত অগ্রসর করে নিয়ে চলেছে ইডি। এক্ষেত্রে তদন্তের স্বার্থে পার্থ-মানিককে পুনরায় একবার মুখোমুখি জেরা করানো হয় কিনা, তা অবশ্য সময়ই বলবে।