বাংলাহান্ট ডেস্ক : ইডির এখন ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) দুর্নীতির তালিকা করতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দাদের (ED)। এরই সঙ্গে রাজ্যবাসীর এখন একটাই প্রশ্ন ‘আর কত?’ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সঙ্গেই কলকাতার বুকেও একের পর সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। মঙ্গলবার আবারও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গেল। নাকতলায় একটি ফ্ল্যাট ও রাজডাঙায় একটি প্রোডাকশন হাউসেরও খোঁজ পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন হলো অর্পিতার (Arpita Mukherjee) এত টাকার উৎস কী? এই প্রশ্নের উত্তরই এখন হন্যে হয়ে খুঁজছেন ইডির আধিকারিকরা।
অর্পিতার সেই বিলাসবহুল ফ্ল্যাট : ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, নাকতলা কেন্দুয়া মেন রোডে অবস্থিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সেই বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। বাড়িটির নাম প্রয়াস। মনে করা হচ্ছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরই পরিচিত কোনও প্রমোটারের কাছ থেকে এটি নেওয়া হতে পারে। জানা যাচ্ছে, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের এই ফ্ল্যাটটির আয়তন ৯০০ স্কোয়্যার ফিট। অর্পিতার ঘর টপ ফ্লোরে। ৪৫ বাস স্ট্যান্ডের ঢিল ছোড়া দূরত্বে রয়েছে এই ফ্ল্যাট।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে এই ফ্ল্যাটটি তৈরি হয় বছর দুই আগে। সেই সময় লকডাউন চলছিল। তখনই এই ফ্ল্যাটটি নেওয়া হয়েছে। ফ্ল্যাটটির নিচে একটি দোকান রয়েছে। সেই দোকানের বিক্রেতার যদিও দাবি তিনি অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বা পার্থ চট্টোপাধ্যায় কাউকেই কোনও দিন দেখেননি এখানে।
রাজডাঙার প্রোডাকশন হাউস : রাজডাঙা মেন রোডে হদিশ মিলেছে প্রোডাকশন হাউসের। বিলাস বহুল এই বাড়িটির তিনটি প্লট রয়েছে। দশ,এগারো, বারো। রহস্যজনক ভাবে কলকাতা পুরসভার কর রাজস্বের যে খাতা রয়েছে সেই খাতায় কিন্তু বাড়ির মালিকের উল্লেখ নেই। শুধুমাত্র এগারো নম্বর প্লটেরই হদিশ রয়েছে। এই বাড়িটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। ২০১৩ সালে শেষ হয় নির্মাণ কাজ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এই জায়গায় নিজের অফিস তৈরি।
অর্পিতা এবং পার্থর দু’জনেরই যাতায়াত ছিল : সূত্রের খবর, বাড়িটিতে আগে বিভিন্ন অফিশিয়াল কাজকর্ম হত। তারপর মডেলিং এবং শুটিং-এর কাজ হয়। পাশাপাশি বিয়ে বাড়িও নাকি ভাড়া দেওয়া হত এখানে। যদিও, বাড়িটি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বলেই দাবি করছেন স্থানীয়রা। তবে ২০১৩ সালে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই বাড়িটি দিয়ে দেন বলে জানা যাচ্ছে। তারপর থেকেই অর্পিতা এবং পার্থর দু’জনেরই যাতায়াত ছিল বাড়িটিতে।
কর ফাঁকি দেওয়ারও অভিযোগ : একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার খাতে দশ এবং বারো নম্বর প্লটের কোনও কর জমা পড়ে না। শুধুমাত্র এগারো নম্বর প্লটের কর জমা পড়ে। অভিযোগ উঠছে বিয়েবাড়ি, শুটিংয়ের জন্য যে কর পুরসভাকে দিতে হয় তা জমা পড়ে না। কোথাও কর ফাঁকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠে আসছে। যদিও, বাড়িটির নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে এলাকাবাসী কেউই এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।