‘হেরে গেলে হবে না”, মাধ্যমিকে ৩১৪ পাওয়া নিজের রেজাল্ট সামনে আনলেন IAS অফিসার

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশের অন্যতম একটি কঠিন পরীক্ষা হল UPSC। যেই পরীক্ষায় সফলতা পেতে বছরের পর বছর ধরে কঠিন পরিশ্রম করেন পড়ুয়ারা। এমতাবস্থায়, অনেকেই মনে করেন যে, এই পরীক্ষায় সফলতা পাওয়ার জন্য একদম প্রথম থেকেই হয়তো দুর্দান্ত ফলাফল করতে হয়। অর্থাৎ, শুধুমাত্র ক্লাসের প্রথমসারির পড়ুয়ারাই হয়তো এই পরীক্ষায় সফলতা হাসিল করেন। কিন্তু, এবার এই তত্বকে কার্যত “ভুল” প্রমাণিত করলেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় IAS অফিসার অবনীশ শরণ।

শুধু তাই নয়, তিনি তাঁর দশম শ্রেণির পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের মার্কশিটটিও সামনে নিয়ে এসেছেন। যেখানে দেখা গিয়েছে তিনি ওই পরীক্ষায় “থার্ড ডিভিশন”-এ পাশ করেছিলেন। অর্থাৎ, তাঁর পরীক্ষার রেজাল্ট মোটেও ভালো ছিলনা। কিন্তু, তাও তিনি পরবর্তীকালে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে UPSC-র মত পরীক্ষায় সফল হন।

ভাইরাল হচ্ছে তাঁর মার্কশিটের ছবি:
প্রকৃতপক্ষে, প্রায় ৫ লক্ষ প্রার্থী প্রতি বছর UPSC পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যেখানে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর মেইনসে সফল প্রার্থীদের একটি ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। শেষ পর্যন্ত ২০০ জনেরও কম প্রার্থীকে IAS-এর জন্য নির্বাচিত করা হয়। এমতাবস্থায়, এই কড়া প্রতিযোগিতার আবহে IAS অবনীশ শরণের এই টুইট দেখে হতবাক হয়েছেন অনেকেই।

মূলত, তিনি তাঁর এই মার্কশিটটি সকলের সাথে ভাগ করে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন প্রার্থীদেরকে অনুপ্রাণিত করেছেন। পাশাপাশি, তিনি বুঝিয়েছেন যে, সঠিক ইচ্ছে এবং পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকলেই সফল হওয়া সম্ভব। উল্লেখ্য যে, বিহারে বেড়ে ওঠা IAS অফিসার অবনীশ শরণ বিহার বোর্ডের মার্কশিটের ছবিটি শেয়ার করেন। যেখানে, স্পষ্ট লেখা রয়েছে যে তিনি থার্ড ডিভিশনে পাশ করেছেন। তা সত্ত্বেও, অবনীশ শরণ ২০০২ সালে UPSC পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে দশম স্থান অর্জন করেছিলেন।

ছোটবেলায় পড়াশোনায় তেমন আগ্রহ ছিল না:
এই প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে IAS অবনীশ শরণ জানান, ছোটবেলায় পড়াশোনার প্রতি তাঁর তেমন আগ্রহ ছিল না। সারাদিন ক্রিকেট খেলা দেখতেন তিনি। এমতাবস্থায়, তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই বিষয়ে তাঁকে বেশি কিছু না বললেও একটা সময়ে তিনি নিজেই বুঝতে পারেন যে এবার পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি, পরিবারের সদস্যদের কাছে তিনি বড় কিছু করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

স্কুলের দিনগুলিতে আইএএস অফিসারদের দেখে আকৃষ্ট হন:
অবনীশ আরও জানিয়েছেন ,যে তিনি স্কুলে পড়াকালীন যখনই কোনো IAS অফিসারকে দেখতেন তখনই বেশ আকৃষ্ট হতেন। এমতাবস্থায়, স্নাতক হওয়ার সময়েই তিনি IAS হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং সেই সময় থেকেই UPSC-র জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। অবনীশ বলেন, তাঁর পরিবারের সদস্যরাও তাঁর এই সিদ্ধান্তে সমর্থন করেছিলেন।

প্রথম বিভাগে স্নাতক পাশ হন:
স্নাতক পর্যায়ে, তিনি বিহারের এলএনএম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ডিগ্রি অর্জন করেন। শুধু তাই নয়, কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় সংকল্পের সাথে, অবনীশ দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতেই নিজের উদ্যোগে UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

এমতাবস্থায়, অবনীশ জানিয়েছেন যে, বর্তমান সময়ে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল সামনে আসছে। যেখানে, অনেক শিক্ষার্থী কম নাম্বার পাওয়ায় হয়তো বাড়ির লোকেরা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। সেই জন্যই তিনি নিজের মার্কশিটটি সামনে এনে পড়ুয়াদের উদ্বুদ্ধ করছেন। পাশাপাশি, তিনি বলেন যে একটি ফলাফল কখনোই ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না। বরং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সমস্ত কিছু অর্জন করা সম্ভব।

https://twitter.com/AwanishSharan/status/1544714293345947649?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1544714293345947649%7Ctwgr%5E%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.aajtak.in%2Ftrending%2Fstory%2Fias-officer-shares-his-10th-class-marksheet-got-3rd-division-passing-marks-tstf-1495183-2022-07-08

এদিকে, তাঁর এই টুইটটি রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইতিমধ্যেই হাজার হাজার জন লাইক করেছেন এটি। পাশাপাশি, সকলেই তাঁর এহেন উদ্যোগকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে একজন লিখেছেন, “আমিও দশম শ্রেণির পরীক্ষায় থার্ড ডিভিশনে পাশ করেছিলাম। সেই কারণেই আমি UPSC-র পড়া ছেড়ে দিই। কিন্তু, আপনাকে দেখে আমি আবার তা শুরু করবো।”


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর