বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শোনা যাচ্ছে যে, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় সপ্তাহে নির্ভয়া গণধর্ষণের (Nirbhaya Gang Rape Case) দোষীদের ফাঁসির সাজা শোনানো হবে। এই ফাঁসি দেবে পবন জল্লাদ (Pawan Jallad), পবনের চার পুরুষ ফাঁসি দেওয়ার কাজ করে আসছে। পবন উত্তর প্রদেশ সরকারের মেরঠ জেলের পার্মানেন্ট জল্লাদ। তাঁকে সরকার প্রতিমাসে বেতন দেয় ফাঁসি দেওয়ার জন্য। পবন জল্লাদ মেরঠের বাসিন্দা। তিনি বহুদিন ধরেই মেরঠে বসবাস করছেন। যদিও ওই শহরে ওনাকে তেমন বেশি মানুষ চেনে না। তিনি পার্ট টাইম জামা কাপড় বিক্রির কাজ করে সাইকেলে করে। প্রায় দুই তিন বছর আগে যখন নিঠারি হত্যাকাণ্ডের দোষী সুরেন্দ্র কোলিকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছিল, তখন পবনকে সেই দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পরে ফাঁসির সাজা রদ হয়ে যায়।
ভারতে এই সময় দুই একটাই অধিকৃত জল্লাদ আছে। পবনের বয়স এখন প্রায় ৫৬ বছর। ফাঁসি দেওয়ার কাজকে সে একটি পেশা হিসেবেই দেখে। উনি জানান, কোন ব্যাক্তিকে যদি আদালত ফাঁসির সাজায় দণ্ডিত করে, তাহলে আমি শুধু নিষ্ঠার সাথে আমার কর্তব্য পালন করব। পবন চার দশকের থেকেও বেশি এই কাজের সাথে যুক্ত। যখন তিনি কিশোর ছিলেন, তখন তিনি ওনার দাদু কালু জল্লাদের সাথে ফাঁসির কাজে ওনাকে সাহাজ্য করতেন। কালু জল্লাদ তাঁর পিতা লক্ষণ সিং এর মৃত্যুর পর ১৯৮৯ সালে ফাঁসি দেওয়ার কাজ শুরু করেন।
কালু নিজের জীবনে ৬০ এর বেশি মানুষকে ফাঁসি দিয়েছেন। তাঁর মধ্যে ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকারী সতবন্ত সিং আর কাহের সিংয়ের ফাঁসিও আছে। তাঁদের ফাঁসি দেওয়ার জন্য কালুকে বিশেষ ভাবে মেরঠে ডাকা হয়েছিল।এর আগে রঙ্গা আর বিল্লাকেও ফাঁসি দিয়েছিল কালু জল্লাদ। পবন নিজের পিতা আর দাদুর থেকে ফাঁসির টেকনিক শিখেছে। দড়িতে কেমন ভাবে গিট বাঁধতে হয়। ফাঁসি দেওয়ার সময় কিভাবে গলার আশেপাশে দড়ি রাখতে হবে। কিভাবে দড়িতে লুপ লাগাতে হবে। কিভাবে ফাঁসির লিভার থিক ভাবে কাজ করবে। ফাঁসি দেওয়ার আগে কয়েকদিন ট্রায়াল পিরিয়ড চলে, যেখানে একটি ব্যাগের মধ্যে বালি ঢুকিয়ে ট্রায়াল দেওয়া হয়। চেষ্টা এটাই থাকে যে, যাকে ফাঁসি দেওয়া হবে তাঁর যেন কম কষ্ট হয়।
পবন নিজের ঠাকুরদা আর বাবার সাথে ফাঁসিতে সাহাজ্য করতে করতে প্রায় ৮০ টি ফাঁসি দেখেছে। পবনের বাবা মম্মু সিং কালু জল্লাদের মৃত্যুর পর জল্লাদের কাজ শুরু করেছিল। মুম্বাই হামলার দোষী আজমল কাসভকে পুনে জেলে ফাঁসি দেওয়ার জন্য মম্মু সিংকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় মম্মু সিং এর মৃত্যু হয়ে যায়। আর পরে সেই কাজ বাবু জল্লাদ করে।