বাংলাহান্ট ডেস্ক: চোখে জল নেই, মনে একফোঁটাও কষ্ট নেই। পরিবারের সদস্যের মৃত্যুতে মৃতদেহকে ঘিরে শ্মশানেই উত্তাল নাচ-গানে মত্ত হলেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এ ঘটনা এদেশের, এ রাজ্যের, নিমতলা মহাশ্মশানের। শ্মশানের সেই চিরপরিচিত দৃশ্যের মধ্যে এই ঘটনা যেন একেবারেই ব্যতিক্রম, খাপছাড়া।
সাদা কাপড়ে ঢাকা মৃতদেহ, উপরে শুধু একটা ফুলের মালা রাখা। সঙ্গে উপস্থিত প্রায় জনা দশেক পরিবারের সদস্য। নিমতলা শ্মশান ঘাটের বৈদ্যুতিক চুল্লি ঘরের পাশেই মৃতদেহ রেখে শুরু হয়ে গেল নাচ-গান। পরিবারের সদস্যরা সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন মিনি স্পিকার। বাজানো হল চটুল হিন্দি গান। শুরু হয়ে গেল মৃতদেহ মাঝে রেখে তাকে ঘিরে নাচ।
কারওর চোখে মুখে দুঃখের চিহ্ণমাত্র নেই। উলটে হাসিতে মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে সকলের। এখানেই শেষ নয়, দেখা গেল ঢোল, করতালও। হিন্দি গানের সঙ্গে সেগুলোও বাজাতে বাজাতে নাচা হল। শুধু বাড়ির পুরুষরাই নয়, মহিলারাও যোগ দিলেন এই নাচে। অপরদিকে তখন এই কাণ্ড দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন শ্মশানে আসা অন্যান্য মানুষেরা। তারা যখন শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ছেন তখন সম্পূর্ণ বিপরীত এই চিত্র মেনে নিতে পারছিলেন না অনেকেই।
অবশ্য এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। কোনও মানুষ মারা গেলে এই ধরনের আচরণের সঙ্গে অভ্যস্ত নন কেউই। বলা বাহুল্য এই খবর ছড়িয়ে পড়তে বেশি দেরি লাগেনি। ফেসবুকের মাধ্যমে এই ভিডিও এখন রীতিমতো ভাইরাল। কিন্তু হঠাৎ এমন আচরণের কারণ কী? জানা গিয়েছে, যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর নাম রিম্পি অরোরা। কলকাতার বাসিন্দা বছর ৫২-র এই মহিলা ছিলেন ওশো সম্প্রদায়ভুক্ত। এই সম্প্রদায়ের মানুষ কেউ মারা গেলে শেষ বিদায় জানানোর সময় আনন্দে মেতে ওঠেন। প্রয়াত রিম্পির পরিবারের সদস্যরাও সেটাই করছিলেন। তাঁর পরিবারের এক সদস্য জানান, তাঁদের ধর্মীয় গুরুর নির্দেশেই এমনটা করেছেন তাঁরা। তাঁদের এই নিয়মের জন্য শ্মশানে আসা অন্যান্য মানুষদের যা যা সমস্যা হয়েছে তার জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন অরোরা পরিবার। তবে এই ঘটনা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই বিষয়টার সমালোচনা শুরু করেছেন। আবার একাংশ মন্তব্য করেছেন বিষয়টা পরিষ্কার ভাবে না জেনে কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়।